1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
ইসলামের সাথে রাষ্ট্রনীতির সম্পর্ক - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সামরিক ও দলীয় প্রভাবে ইসি কাজ করছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশে রাকিবুল: ছাত্রদলকে রুখতে পারবে না কেউ ইসলামে বন্ধুর মর্যাদা ও সঠিক বন্ধু নির্বাচনের গুরুত্ব কক্সবাজার বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের সাথে কুকুরের ধাক্কা আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনেই বিচার পরিচালিত হবে: তাজুল এনসিপির সমাবেশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিলেন সারজিস মার্চ ফর জাস্টিস অংশ নেয়া  শিক্ষকদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি’র ১০০ আসন চূড়ান্ত, ২০০ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী দেড় হাজার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ খুলছে আজ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন ডিসি নিয়োগের প্রস্তুতি

ইসলামের সাথে রাষ্ট্রনীতির সম্পর্ক

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১১৬ জন খবরটি পড়েছেন
বিলাল হোসেন মাহিনি

।। বিলাল হোসেন মাহিনী।।

রাষ্ট্রনীতি অর্থ কী? রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিই রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি বলে পরিচিত। রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয়াদি হলো রাষ্ট্রনীতির অর্ন্তভূক্ত; আর সরকার সম্বন্ধীয় কার্যকলাপকেই বলা হয় রাজনীতি। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় বিধান এনে সমাজ ও রাষ্ট্রে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর রাসুলকে কোন কর্তব্য দিয়ে পাঠিয়েছিলেন কুরআন মজিদের বহু স্থানে বিভিন্নভাবে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তা সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, ‘তিনিই এ সত্তা যিনি তাঁর রাসুলকে হেদায়াত ও দীনে হকসহ পাঠিয়েছেন, যাতে আর সব দীনের ওপর একে (দীনে হককে) বিজয়ী করে তুলেন।’ (সূরা আল ফাতহ-২৮) দীর্ঘ ও কঠোর সংগ্রামের পর নবি করিম (সা.) বিজয়ী হন এবং ইসলামী আদর্শে সমাজব্যস্থাকে গড়ে তুলতে সক্ষম হন। ইসলামি রাজনীতি অনৈসলামী সমাজব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে মানবসমাজকে পুনর্গঠনের উদ্দেশ্যে আল্লাহর রাসুল (সা.) যে নীতি অবলম্বন করেন তাই হলো আদর্শ ইসলামী রাষ্ট্রনীতি। এ ধরনের আদর্শ বাস্তবায়ন রাজনৈতিক কার্যকলাপ ব্যতীত কী করে সম্ভব হতে পারে? সমাজবিজ্ঞান, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও আদর্শবাদী আন্দোলনের ইতিহাস যারা কিছুটা চর্চা করেন এবং মানবসমাজের সমস্যা নিয়ে যারা কিছুটা চিন্তাভাবনা করেন তাদের পক্ষে এ কথা বোঝা অত্যন্ত সহজ। যারা স্থূল দৃষ্টিতে ইসলামকে দেখেন তারা এটাকে একটা ধর্ম মাত্র মনে করে রাজনীতিকে ইসলাম থেকে আলাদা করতে চান।

প্রচলিত সমাজের নেতৃবৃন্দ কোনোকালেই ইসলামের আহ্বান গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। কেননা, তাদের পার্থিব যাবতীয় স্বার্থ প্রতিষ্ঠিত সমাজব্যবস্থার মধ্যেই নিহিত ছিল। তবু নবিগণ ইসলামের দাওয়াত সর্বপ্রথম নেতাদের নিকটই পেশ করেছেন। পবিত্র কুরআনের সূরায়ে আ’রাফের অষ্টম রুকু থেকে একাধারে কয়েকটি রুকুতে আল্লাহ পাক হযরত নূহ (আ), হুদ (আ), সালেহ (আ), লূত (আ), শোয়াইব (আ) ও মূসা (আ)-এর রাষ্ট্রনীতির যে বর্ণনা দিয়েছেন তাতেও দেখা যায় যে, প্রত্যেক রাসুলই সমাজের নেতৃস্থানীয় যাদের নিকট দাওয়াত পেশ করতে আদিষ্ট হয়েছেন। সেখানে এ কথাও প্রমাণিত হয়েছে যে, সমাজপতিগণ প্রত্যেক রাসুলেরই বিরোধিতা করেছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহান ব্যক্তিত্ব এমন এক সমন্বিত আদর্শ; যেখানে শাসক, রাষ্ট্রনায়ক, সমাজবিদ, প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং অনুপম সংগঠকের গুণাবলি একত্রে পূর্ণরূপে বিকশিত। পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াতে এই বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে যে তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে নিযুক্ত শাসক ছিলেন এবং এই মর্যাদা তাঁকে রাসুলের দায়িত্বের সঙ্গেই অঙ্গাঙ্গিভাবে প্রদান করা হয়েছিল। রাসুল (সা.)-এর শাসনক্ষমতা ও রিসালাত মূলত একই সত্তার অভিব্যক্তি। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর প্রত্যেক নবী-রাসুলই ইবাদতের শিক্ষার সাথে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার দিক্ষাও দিয়েছেন। একজন শাসক হিসেবে বিশ্বনবীর (সা.) আনুগত্য করা আল্লহর আনুগত্যেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাসুলের (সা.) রাষ্ট্রনীতির বিরোধিতা করা মানে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করা। রাষ্ট্র ব্যবস্থা তথা রাষ্ট্রনীতির সাথে ‘ইসলাম’ এতটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে, তাফসিরে ইবনে কাসিরে বর্নিত হয়েছে, ‘আল্লাহ তায়ালা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সাহায্যে সেই সব জিনিস বন্ধ করে দেন যা কুরআনের সাহায্যে বন্ধ করেন না।’ কানযুল উম্মাল গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, “ইসলাম ও রাষ্ট্র দুই জমজ ভ্রাতা। একটি অন্যটি ব্যতিরেকে চলতে পারে না। ইসলাম একটি ভিত্তি, রাষ্ট্র ও সরকার উহার রক্ষক। ভিত্তি না থাকলে সৌধ ধ্বংস হয়ে যায় আর রক্ষক না থাকলে উহা লুন্ঠিত হয়।”

ইসলামি রাষ্ট্রনীতির স্বরূপ : পবিত্র কুরআনে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব বর্নিত হয়েছে এভাবে, ‘এরা ওই সব লোক, যদি আমি তাদের ভূপৃষ্ঠে ক্ষমতা অর্পণ করি, তাহলে তারা নামাজ কায়েম করবে; জাকাত আদায় করবে; সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজ থেকে বারণ করবে।’ (সুরা : হজ-৪১) আরও বলা হয়েছে, ‘তোমরা সেই উত্তম জাতি, যাকে মানুষের কল্যাণে সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দেবে, অসৎ কাজ থেকে বারণ করবে এবং ঈমান রাখবে আল্লাহর ওপর।’ (সুরা : আলে ইমরান-১১০) কুরআনের বর্ণনায় রাষ্ট্র পরিচালনার আরেকটি উদ্দেশ্য ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘হে দাউদ। আমি তোমাকে দুনিয়াতে খলিফা নিযুক্ত করেছি, অতএব তুমি লোকসমাজে ন্যায়বিচার করো এবং প্রবৃত্তির পেছনে পড়বে না।’ (সুরা : সোয়াদ-২৬) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা সেই বিধান মোতাবেক ফায়সালা করবে না, যা আল্লাহ নাজিল করেছেন, তারাই জালিম।’ (সুরা : মায়িদা-৪৫) সফল রাষ্ট্রনায়ক মুহাম্মাদ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের আগে যারা অতিবাহিত হয়েছে, তারা ধ্বংস হয়েছে এ কারণে যে তাদের মধ্য থেকে যখন কোনো বড়লোক চুরি করত, তখন তারা তাকে ছেড়ে দিত; আর যখন কোনো দুর্বল চুরি করত, তখন তারা তাকে শাস্তি দিত। আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মদের মেয়ে ফাতিমাও চুরি করে, তাহলে আমি অবশ্যই তার হাত কেটে দেব।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪৭৫)

রাষ্ট্রনীতি আল্লাহর বিধানের অনুসরনেই তৈরী হতে হবে। এ ব্যাপারে কুরআনে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। ‘সাবধান! সৃষ্টি আল্লাহর, তাই বিধান দেওয়ার অধিকারও একমাত্র তার।” (সূরাহ আল-আরাফ-৫৪) অন্যত্র এসেছে, ‘আইন ও বিধান একমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট।’ (সূরা ইউসুফ-৪০) কুরআনে কারিম স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের মৌলিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের অন্যতম হলো শিষ্টের লালন ও দুষ্টের দমন। রাসুল (সা.) রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটা বিষয়ে নীতিমালা গেঁথে দিয়েছেন। সুতরাং তার অনুসরণ করতে হবে দলমত নির্বিশেষে আমাদের সবার। কিন্তু, দীর্ঘ পরাধীনতার পরিণামে আমাদের ধার্মিকদের মধ্যে আজ এমন কিছু লোক সৃষ্টি হয়েছেন, যারা দীনদার ও পরহেজগার বলে সমাজে পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও ‘রাজনীতি’ করাকে নিন্দনীয় মনে করেন, অথবা অন্ততপক্ষে অপছন্দ করে। তাঁরা দেশের রাজনীতি থেকে নিজেদেরকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখাকে দীনদারি ও তাকওয়ার জন্য জরুরি মনে করেন। আবার আর এক শ্রেণীর লোক পাশ্চাত্য চিন্তাধারা, মতবাদ ও জীবনদর্শনের অনুসারী হওয়ার ফলে ইসলামকেও খ্রিষ্টধর্মের মতো এক অনুষ্ঠানসর্বস্ব পূজা-পার্বণ বিশিষ্ট ধর্মমত বলে মনে করেন। তাঁদের বিশ্বাস মোতাবেক ধর্ম ও রাজনীতি সম্পূর্ণ পৃথক। ইসলামের ক্ষেত্রে তেমনটি নয়, ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন-বিধান।
স্বার্থপর ও আদর্শভিত্তিক রাজনীতি যেমন ইসলামবিরোধী, নবী অবলম্বিত রাজনীতি থেকে পরাক্সমুখ হওয়াও তেমনি অনৈসলামী। বরং রাসূল যে ধরনের রাজনীতি করেছেন তা মুসলমানদের জন্য প্রধানতম ফরজ। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসুল (সা.)বলেছেন, ‘ইসলাম ও রাষ্ট্রব্যবস্থা দুই সহোদর ভাইয়ের ন্যায়। তাদের একজন অপরজনকে ছাড়া সংশোধন ও পরিপূর্ণ হতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ইসলাম হচ্ছে কোন অট্টালিকার ভিত। আর রাষ্ট্রশক্তি তার পাহারাদার। যে অট্টলিকার ভিত নেই তা যেমন পড়ে যেতে বাধ্য, তেমনি যার পাহারাদার বা রক্ষক নেই তাও ধ্বংস হয়ে যেতে বাধ্য। (ইমাম দাইলামী, আল ফিরদাউস ১/১১৭; ইমাম সুয়ূতী, জামউল জাওয়ামি হাঃ ১০১২২; কানযুল উম্মাল হাঃ ১৪১৬১৩) সুতরাং যারা বলে রাজনীতির সাথে কুরআনের কোনো সম্পর্ক নেই; ইসলাম বলে, তাদের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews