ডেস্ক নিউজ।
বৈশাখের শুরু থেকেই রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশে যে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে, তা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি আগামী পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলেছে। একইসঙ্গে দেশের ২৭টি জেলায় বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কাও জারি করা হয়েছে।
বজ্রপাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে বেশ কিছু জরুরি পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বজ্রবৃষ্টি চলাকালীন ঘর অথবা নিরাপদ কোনো আশ্রয়ে থাকার কথা বলা হয়েছে। পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, এই বৃষ্টিপাতের পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু অংশে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কিছু এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) একই পরিস্থিতি বজায় থাকতে পারে এবং ওই দিন সারাদেশে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু অংশে এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় একই ধরনের বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এর পরের পাঁচ দিনের আবহাওয়ায় তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
বৃষ্টিপাতের তীব্রতা সম্পর্কে অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় ১০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হালকা, ২২ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি এবং ৪৩ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হিসেবে ধরা হয়। ৪৪ মিলিমিটার থেকে ৮৮ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিকে ভারী এবং এর বেশি হলে অতিভারী বৃষ্টিপাত বলা হয়। বৃহস্পতিবার রংপুরে দেশের সর্বোচ্চ ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও, দিনাজপুর, ফেনী, নীলফামারী ও পটুয়াখালী সহ দেশের অনেক স্থানে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল খুলনায় ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, বজ্রপাতের আশঙ্কায় দেশের ২৭টি জেলার জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, এসব এলাকায় ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বজ্রপাতের সময় নিরাপদে থাকার জন্য কিছু জরুরি নির্দেশনা অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে – মেঘের গর্জন শুনলে ঘরে বা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করা, ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখা, এই সময় ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা, বাইরে থাকলে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে প্রবেশ করা, গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়া, কংক্রিটের মেঝেতে না শোয়া, ইলেকট্রনিক গ্যাজেট চার্জ না করা এবং সেগুলোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা, জলাশয় থেকে দ্রুত উঠে আসা, বিদ্যুৎ পরিবাহী বস্তু থেকে দূরে থাকা এবং ঝড়ের সময় বাড়ির বাইরে না যাওয়া।