বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে গত বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবারের মধ্যে ২৯৮টি নতুন আবাসন বিতরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সকালে রাজধানী থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই ঘরগুলো বিতরণ করেন।
২০২৩ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলায় ভয়াবহ বন্যায় বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এসব জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে নতুনভাবে ঘর নির্মাণ করে দেয় সরকার।
উপকারভোগী বাছাইয়ে ঘর সম্পূর্ণরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন পরিবারগুলোর দুঃস্থতা, আর্থিক সামর্থ্য ও স্থানীয় অগ্রাধিকার বিবেচনায় নেয়া হয়। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য প্রতিনিধিদের সমন্বিত জরিপের ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করা হয়।
মোট ৩০০টি ঘরের মধ্যে ফেনী জেলায় বরাদ্দ ১১০টি, নোয়াখালীতে ৯০টি, কুমিল্লায় ৭০টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সহায়তায় দুইটি ডিজাইনে এসব ঘর নির্মিত হয়, যাতে থাকে দুইটি কক্ষ, রান্নাঘর, টয়লেট ও বারান্দাসহ কমন স্পেস।
প্রথম ডিজাইনের ঘরের আয়তন ৪৯২ বর্গফুট এবং খরচ প্রায় ৭.২৫ লক্ষ টাকা, অন্যটির আয়তন ৫০০ বর্গফুট এবং খরচ প্রায় ৭.২৬ লক্ষ টাকা।
প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রায় ২৪.৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ঘরগুলো নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় দুটি ঘর এখনো নির্মাণ হয়নি, যা দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যারা বাড়ি পেয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন। দেশের মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে যে সাহস জুগিয়েছে, সে সাহস মনের মধ্যে ধারণ করবেন।”
ঘর পেয়ে নিজেদের অনুভূতি জানাতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন চারজন উপকারভোগীও। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের পরিচালক মো: মনিরুল ইসলাম পাটোয়ারী।