আজকের আধুনিক যুগে কম্পিউটার আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। ব্যক্তিগত কাজকর্ম থেকে শুরু করে অফিসের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ন কাজে কম্পিউটার স্থান করে নিয়েছে। আর প্রাত্যাহিক জীবনে স্মার্টফোন, ট্যাবলেটসহ নানা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ছাড়া তো এখন চলাই দুস্কর।
এসমস্ত ডিভাইস আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে যেমন সহজ ও গতিশীল করেছে, একইভাবে এর অসচেতন ও ভুল ব্যাবহার ডেকে আনতে পারে মারাত্নক বিপর্যয়। বিশেষ করে যারা চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন দূরদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টিতে ভুগছেন তাদের এ অবস্থা আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। আর যারা সুস্থ, তাদের চোখের লেন্সের কর্মক্ষমতা কমতে কমতে দূরদৃষ্টি বা ক্ষীণদৃষ্টির মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
তাই বলে তো আর কম্পিউটার এড়ানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে জানতে হবে চোখকে ভাল রাখার ঊপায় সমুহ। প্রকৃতপক্ষে, সঠিক উপায়ে কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বসে কাজ করলে অথবা স্মার্টফোন ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যঝুকি একেবারেই কমে যায়।
তবে, আমাদের দেশের ৯০ ভাগ কম্পিউটার বা স্মার্ট ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীই এর সঠিক ব্যবহার জানেননা। যে কারনে অজান্তেই প্রয়োজনীয় এসব ডিভাইসের ব্যাবহার চোখের ছোট-বড় থেকে শুরু করে নানা জটিল সমস্যা সৃষ্টি করছে।
আসুন আজকে জেনে নেই, কম্পিউটার বা যেকোনো স্মার্ট ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যাবহারের সময় চোখের যে যে ব্যায়াম করে চোখকে ভাল রাখবেন।
আই ব্লিংকিং অর্থাৎ ঘন ঘন চোখের পলকে ফেলা। কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে বা স্মার্টফোনে তাকিয়ে থাকার সময় আমরা চোখের পলক ফেলতে ভুলে যায়। একটানা পলক না ফেলার কারনে চোখের কর্নিয়া শুষ্ক হয়ে যায় এবং তরল চোখের চারপাশে সমানভাবে সঞ্চালিত হতে পারেনা। দীর্ঘদিন ধরে এরকম চলতে থাকলে একটা সময়ে তা চোখের রেটিনা সঞ্চালনকারী মাংশপেশিকে আড়ষ্ট করে ফেলে।
কিভাবে আই ব্লিংকিং করবেন?
প্রতি ৪৫ মিনিট অন্তর কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে থেকে চোখ সরিয়ে নিন। ৩০ সেকেন্ড ধরে একটানা ঘনঘন চোখের পলক ফেলুন। এতে করে চোখের তরল কর্নিয়ার চারপাশজুড়ে ছড়িয়ে যাবে।
৪৫ মিনিট অন্তর ৩০ সেকেন্ড ধরে দেখার উদ্দেশ্যে ধীরে ধীরে চোখের মণিকে একবার বামে একবার ডানে ঘুরান। মনে রাখবেন, কোনোভাবেই যেন তাড়াহুড়ো করতে যাবেন না।
৪৫ মিনিট পর পর চোখের মণিকে একবার সামনে উপরের দিকে একবার নিচের দিকে আনয়ন করুন। কিছুক্ষন বামদিকে কিছুক্ষন ডানদিকে তাকান।
কিছুক্ষন দূরে কিছুক্ষন কাছে তাকালে চোখের লেন্স সংকোচন-প্রসারণকারী মাংশপেশির উন্নতি হয়। মাংশপেশি মোটা হয়, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। ফলে চোখের লেন্সের অবস্থান দর্শনীয় বস্তুর অবস্থানের সাপেক্ষে নিখুতঁভাবে পরিবর্তনে সক্ষম হয় যা দৃষ্টিশক্তিকে আরও স্পষ্ট করে।
এই ব্যায়াম সমগ্র চোখে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চোখের আলোক সংবেদনশীল কোষগুলো বিশ্রাম দিয়ে নতুনভাবে উদ্দিপ্ত করে।
কাজের বিরতিতে প্রতি ৪৫ মিনিট পর ৩-৫ সেকেন্ড চোখ বন্ধ করুন আবার ৩-৫ সেকেন্ড চোখ খুলুন। ৭ বার প্রক্রিয়াটি ধারাবাহিকভাবে অনুসরন করুন।