1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
জাতীয় সংগীত ফ্যাসিবাদের আতুর ঘর - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ইসলামে বন্ধুর মর্যাদা ও সঠিক বন্ধু নির্বাচনের গুরুত্ব কক্সবাজার বিমানবন্দরে উড়োজাহাজের সাথে কুকুরের ধাক্কা আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনেই বিচার পরিচালিত হবে: তাজুল এনসিপির সমাবেশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিলেন সারজিস মার্চ ফর জাস্টিস অংশ নেয়া  শিক্ষকদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি’র ১০০ আসন চূড়ান্ত, ২০০ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী দেড় হাজার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ খুলছে আজ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন ডিসি নিয়োগের প্রস্তুতি পেকুয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযান, অস্ত্রসহ যুবক আটক গভীর রাতে ১২ প্রহরী জিম্মি, নাটোর চিনিকল থেকে ট্রাকযোগে ডাকাতি

জাতীয় সংগীত ফ্যাসিবাদের আতুর ঘর

  • সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • ১৩৮ জন খবরটি পড়েছেন

মোঃ মাসুম বিল্লাহ।
পৃথিবীর প্রতিটা দেশের একটা নিজেস্ব নাম এবং তার একটা জাতীয় সংগীত রয়েছে। জাতীয় সংগীতে একটি জাতির আশা আকাঙ্ক্ষা ও গৌরবের প্রতিফলন ঘটে। পৃথিবীর ইতিহাসে ১৫৬৮ থেকে ১৫৭২ সালে রচিত সবচেয়ে পুরানো জাতীয় সংগীত হিসাবে ধরা হয় নেদারল্যান্ডের সঙ্গীত ভিলহেলমাসকে। জাতীয় সংগীত হলো সে দেশের সংস্কৃতির এক বহিঃপ্রকাশ। তার ভিতরে অন্তর্ভুক্ত থাকে সে দেশের মানুষের সংগ্রামের ইতিহাস। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের দেশের জাতীয় সংগীতের মধ্যে কি রয়েছে এটা বোঝা বেশ কঠিন। যদিও ১৯৭১ সালে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা এই সঙ্গীতকে মর্মে ধারণ করে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এসে জাতীয় সংগীত নিয়ে নানান ধরনের বিতর্কের জন্ম হয়েছে। এটি কি আদৌ আমাদের জাতীয় সংগীত হওয়ার উপযোগী কিনা এটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কেউ কেউ। কেননা এটা রবীন্দ্রনাথের লেখা একটি গান। আর রবীন্দ্রনাথ ছিলেন ভারতের একজন কবি।

সুতরাং বাংলাদেশের কবি না হওয়ার জন্য অনেকের বিরোধিতা করণ। ১৯৪৭ এর দেশ বিভাগ হয়ে যে আলাদা ভূখণ্ডের জন্ম হয়, সেখানে বাংলাদেশের একটা অস্তিত্ব বিরাজমান ছিল। ১৮৬১ সালে জন্ম নেওয়া রবীন্দ্রনাথ ১৯৪১ সালে মারা যান। সুতরাং এ জাতীয় সংগীত ১৯৭১ সালে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশর কী করে প্রতিনিধিত্ব করে? ১৯০৫ সালে রবীন্দ্রনাথ বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ তুলনা করে এই সংগীতটি লিখে বাংলাকে ভাগ করার বিরোধিতা করেছিলেন। তাই প্রশ্ন আসে যে সংগীত বাংলা ভাগের বিরোধিতা অর্থাৎ বাংলাদেশের বিরোধিতা সেই সংগীতকে কেন জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করতে হবে? এটা যদি এতোই বাংলার প্রতিনিধিত্ব করে তবে কেন দুই (পশ্চিম) বাংলার জাতীয় সংগীত হিসাবে গাওয়া হয় না? কেন এই গানের মূল আবেদন অনুযায়ী দুই বাংলাকে এক করার আন্দোলন হয় না? অনেকে মনে করেন, রবীন্দ্রনাথ বিরোধীতা থেকে এসব প্রশ্নের জন্ম। কিন্তু বাস্তবিক তা যুক্তি সংগত নয়। রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে সমুদ্রের মতো। সেখান থেকে যে যতো বেশি পানি সংগ্রহ করবে কিন্ত সে পানি কখনো শেষ হবে না। ফলে এলিট শ্রেণি রবীন্দ্রনাথকে প্রতিষ্ঠা করতে তার বিরোধীতার মতকে উসকে দেয়।

এর মুক্তিযুদ্ধে যে মুক্তিযোদ্ধার কন্ঠে এ গান উঠেছে সেও এই রবীন্দ্রনাথকে চিনতো না। ঠিক তেমনি বর্তমানের শ্রমিক, মুজুর, জেলে, কৃষক তাদের কাছে কে রবীন্দ্রনাথ আর কে নজরুল এ সব কোন ভাবনার বিষয় না। কিন্তু যুগ যুগ ধরে এই বিতর্ক জমিয়ে রেখে কিছু মানুষ স্বার্থ হাসিল করে চলেছে। তাদের প্রধান সীমাবদ্ধতা সাহিত্য পড়ে জীবনকে সাহিত্য ভাবতে শুরু করে। তবে সাহিত্য ও জীবন এক না। সাহিত্য সমাজ বাস্তবতা থেকে উঠে আসা অবাস্তব ভাবনা। কিন্তু জীবন বাস্তব সত্য। তাকে ওন করা লাগে। সেই ওন করা বাস্তবতা কতটুকু ধারণ করে এ সংগীত?

আবার এই জাতীয় সংগীতের মধ্যে দেশমাতার বন্দনা রয়েছে। এই বন্দনা গীতকে অনেকেই মনে করেন যে, হিন্দুদের দেবতাকে ভক্তি বা দেবতার উদ্দেশ্য উৎসর্গকৃত একটি গান। ফলে দেবতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ গানকে অনেকে জাতীয় সংগীত করতে নারাজ। অনেকের মতে, জাতীয় সংগীতের মধ্যে সে দেশের বীরদের অবস্থান স্পষ্ট হবে এবং সে দেশের সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি দেখা যাবে। কিন্তু আমাদের জাতীয় সংগীতের ভিতরে ১৯৭১ এর বীরত্বগাঁথা ইতিহাস না দেখে এর বিরোধিতা করেন।

জাতীয় সংগীতের পক্ষে বিপক্ষে নানান মত রয়েছে। কিন্তু এটা যখন আমাদের বিভাজনের পথে এবং বাংলাদেশের অস্তিত্বের সংকট তৈরিতে পরিচালিত হয় তখন আমাদের নতুন করে ভেবে দেখতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভারত বিরোধী এক নতুন প্রজন্ম তৈরি হয়েছে। তারা ভারতের বিরোধিতার কারণেই এই সংগীতের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কেননা এটা যেহেতু ভারতের কবির লেখা, এমনকি এ দেশ তৈরি হওয়ার আগে লেখার কারণে কোন ভাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার পক্ষে তারা মত দেন না। কিন্তু ভিন্ন দিকে অন্য একদল মনে করেন, ৭১ সালে এই গান গেয়ে মানুষ দেশ স্বাধীন করার শপথ নিয়েছিল। ফলে এর বিরোধীতা করা চলে না।

প্রশ্নটা তখন আরো দৃঢ় হয়ে ওঠে, যখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, যারা এদেশের স্বাধীনতা আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল তাদেরকে বিতাড়িত করা হয় ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েমে বা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য।রাষ্ট্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে দেখা যায় যে তার স্বপক্ষের শক্তিরা যখন এই নামে কোন কথা বলতে পরছে না, তখন জাতীয় সংগীত নিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা বাঁধানো চেষ্টা করে। তারা আগস্টের বিপ্লবী শক্তিকে বিতর্কিত করতে এবং তাদের ঐক্যকে বিনষ্ট করার জন্য এই জাতীয় সংগীতকে আশ্রয় করে।

তারা যখন বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ড সৃষ্টি করে যাচ্ছে, ঠিক তখনই প্রশ্ন ওঠে যে, এই জাতীয় সংগীত যদি আমাদের ঐক্যের প্রতীক না হতে পারে বা পতিত শক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে সুযোগ করে দেয় তাহলে এর গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? আরো একটা বড় কারণ হতে পারে যে, এই সংগীত যতদিন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃত থাকবে ততদিন এদেশের সুশীল প্রগতিশীল মানুষগুলো ভারতের অখন্ডতাই বিশ্বাস করবে । সুতরাং তারা বাংলাদেশকে ভারতের কৃপায় পাওয়া ভূখন্ড ভেবে তাদের একটা অঙ্গরাজ্যের ন্যায় আনুগত্য প্রকাশ করে চলবে। জাতীয় সংগীত যদি একটি জাতির আশা আকাঙ্ক্ষা ও গৌরবের প্রতিফলন হয় তবে, আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার কতটুকু প্রতিফল রয়েছে? তা যেমন ধূয়াশার সৃষ্টি করে, তেমন অখন্ড বাংলার চেতনার ছায়া ফেলে যায়। আবার অতীত প্রীতি অর্থাৎ ভারত প্রেমে উৎসাহিত করে। ১৯৭১ পরবর্তী এ প্রেমের অস্তিত্ব বাংলাদেশ বিরোধীতার নামান্তর নয় কি?

জাতীয় সংগীত কি তবে ফ্যাসিবাদের আতুরঘর? আজকে বড় জিজ্ঞেসা হয়ে দাঁড়িয়েছে এটাকে ধারণকারী কতটুকু ৭১ কে ধারণ করে? আওয়ামী লীগকে ছুড়ে ফেলা মানে ৭১ এর আদর্শ থেকে বেরিয়ে আসা। তবু কেন জাতীয় সংগীতের নামে ৭১ কে পুঁজি বানানো হচ্ছে। কারণ এ দেশের বেশিরভাগ অতীত প্রেমি। জাতীয় সংগীত এর প্রেক্ষাপটও ভিন্ন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে এ সংগীত গাওয়া যদি প্রেরণার স্থল হয় তবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া আওয়ামী লীগ কেন হল না? কারণ আওয়ামী লীগ একটা দল, যার আছে সাংগঠনিক শক্তি ও জনবল। আর জাতীয় সংগীত বিমূর্ত বিষয় ও ধরা করা যায় না বলে? তবে মনে রাখতে হবে বিমূর্ত বিষয় অনেক ক্ষেত্রে সংগঠন ও জনবল থেকেও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। কেননা তার কাজ দেখা যায়না কিন্তু ভেতরে ভেতরে স্পর্শ থেকে যায়।

লেখাটি লেখকের একান্তই নিজস্ব মতামত

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews