1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
কে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন? - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩৬ কোটি টাকার স্কলারশিপে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাচ্ছেন মীম বাবার ওপর অভিমান করে সিলেটে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা জিম্মি মুক্তি না হলে যুদ্ধ চলবে: ইসরায়েলি সেনাপ্রধান সাবেক প্রতিমন্ত্রী কোরবান আলীর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ অপহরণের দুই দিন পর পুলিশি অভিযানে বান্দরবানে ৭ বছরের এক শিশু উদ্ধার কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি: নিহত ৫ ‘যে গাছে ফরহাদের ছবি আছে, সেই গাছের নিচে শপিং ব্যাগে টাকা রেখে যাবি’ জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের “জুলাই দ্রোহ” বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে প্রথম সভা করলেন নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ শেরপুর–মৌলভীবাজার মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় যুবক নিহত

কে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন?

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫
  • ২০০ জন খবরটি পড়েছেন
কে এই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন?

পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ জগতে সুব্রত বাইন একটি বহুল পরিচিত নাম। সন্ত্রাস, তোলাবাজি, এবং খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিল। তবে কে এই সুব্রত বাইন? কীভাবে সে হয়ে উঠল কলকাতার আতঙ্ক?

সুব্রত বাইন মূলত দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা। ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে সে অপরাধ জগতে প্রবেশ করে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় গুণ্ডা ও তোলাবাজ হিসেবে তার নাম উঠে আসে। কিন্তু দ্রুতই সে একাধিক অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে এবং গড়ে তোলে নিজের বাহিনী।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। এমনকি সে রাজনীতির ছত্রছায়ায় থেকে একসময় রাজনৈতিক আশ্রয়ও পেয়েছিল বলে জানা যায়। ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকে বাইন একটি ভয়ঙ্কর গ্যাং তৈরি করে এবং বিভিন্ন এলাকায় প্রভাব বিস্তার শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুব্রত বাইন কেবলমাত্র কলকাতায় নয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি জেলার বিভিন্ন অঞ্চলেও নিজের প্রভাব বিস্তার করেছিল। তার নামে ২০টিরও বেশি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা এখনও বিচারাধীন।

দীর্ঘ সময় পলাতক থাকার পর, বিভিন্ন গোপন সূত্রে জানা যায় সে কখনও বাংলাদেশ, আবার কখনও মুম্বাই বা দিল্লির আশেপাশে আত্মগোপন করে ছিল।

তার নামে রয়েছে ৩০টিরও বেশি খুনের মামলা, যার প্রায় সবগুলোতেই আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। শুধু খুন নয়, অবৈধ অস্ত্র, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা-সহ মোট মামলার সংখ্যা ১০০-এরও বেশি। ২০০১ সালে বাংলাদেশ সরকার তার মাথার দাম ঘোষণা করে। আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ‘রেড কর্নার নোটিশ’ তালিকায় রয়েছে তার নাম।

ভারতের ছত্রছায়ায় দুই দশক

২০০১ সাল থেকে সুব্রত বাইন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (IB)-র ছত্রছায়ায় ভারতে অবস্থান করছিলেন। একাধিক বাংলাদেশবিরোধী অপারেশনে তাকে ব্যবহার করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা এবং নাগাল্যান্ড লিবারেশন ফ্রন্ট নেতাদের বিরুদ্ধে টার্গেট কিলিং। এমনকি, ঢাকার জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ চাপ কাবাব-এর মালিক মোস্তাকিমকেও তার মাধ্যমেই হত্যা করা হয় বলে জানা যায়।

বিশেষ সূত্র জানায়, প্রায় দেড় বছর আগে তাকে গোপনে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হয় ভিন্ন পরিচয়ে। উদ্দেশ্য ছিলো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া—বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট ২০২৪ পরবর্তী সময়ে তার আশ্রয়দাতারা রাজনৈতিক ক্ষমতা হারালে, পেশাদার এই অপরাধী রাজধানীর সাধারণ মানুষের মাঝে আত্মগোপন করে।

অস্ত্র, আধিপত্য এবং গুপ্ত পরিকল্পনা

সাম্প্রতিক গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, মতিঝিলের অপর এক শীর্ষ সন্ত্রাসী ইখতিয়ারের মাধ্যমে সুব্রত অস্ত্র ক্রয় করেছে, যার মধ্যে রয়েছে থানা থেকে লুট হওয়া ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র। তার ডান হাত, ভারতের মুর্শিদাবাদে অবস্থানরত পুরস্কার ঘোষিত অপরাধী মোল্লা মাসুদ-এর মাধ্যমে ঢাকার গোপীবাগ এলাকায় একটি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সুব্রত।

এছাড়া সে সুইডেনপ্রবাসী আসলাম ও কাওরান বাজারের স্থানীয় নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে সমঝোতা করে এলাকাভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ গড়ে তুলছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, এই পরিকল্পনায় তাকে সহায়তা করছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত হাসিনার ঘনিষ্ঠ কিছু নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস নেটওয়ার্কে সংযুক্তি

গত কয়েকদিন আগে, নেপালে অবস্থানরত বিডিআর হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ও পলাতক লেদার লিটন এবং ক্যাসিনো কান্ডে আলোচিত যুবলীগ নেতা সম্রাট ও মালয়েশিয়ায় থাকা খালেদ-এর সঙ্গে অস্ত্র কেনাবেচা ও সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিকল্পনা করেছে সুব্রত। এমনকি, বর্তমানে সে হাইভ্যালু টার্গেট এসাসিনেশন অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা পরিকল্পনায় সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে যোগসূত্র

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দিনে সাবেক সদস্য তোরাব আলীর মোবাইল থেকে করা ১১টি আন্তর্জাতিক কলে ৫টি নম্বর সরাসরি সুব্রত বাইনের কলকাতার নম্বর ছিল। লেদার লিটন সরাসরি তাকে আপডেট দিচ্ছিলো।

রাজনৈতিক মদদ ও অভ্যন্তরীণ লিংক

মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সুভাষ চন্দ্র সরকার, যিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন, মূলত সুব্রতের সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ স্থাপন করিয়ে দেন। এই সুভাষ সরকারকে বাংলাদেশে RAW-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ এসেট হিসেবে ধরা হয়।

বিশেষ সংস্থার মতে, সুভাষ সরকারের প্রভাবেই ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বহাল থাকতে পেরেছেন। একই সূত্রে জানা যায়, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ-এর ভাই হারিছ আহমেদকে ভারতের আশ্রয়ে রাখতে এবং সুবিধা দিতে এই সুভাষই মূখ্য ভূমিকা পালন করতেন।

কলকাতার সাবেক কূটনৈতিক কর্মকর্তা গৌর গোপাল সাহা (যিনি করোনায় মারা যান) ছিলেন সুব্রত, হারিছ, মোল্লা মাসুদদের অভিভাবক হিসেবে কাজ করা প্রধান ব্যক্তি।

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সুভাষ সরকার গ্রেপ্তার হওয়ার আগে, মোহাম্মদপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফ ও হারিছের সাম্রাজ্য বাইনের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, যাতে পিচ্চি হেলাল ও ইমন সেখানে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে। তবে সেই ফোন মিটিংয়ের আগেই সুভাষ সরকার গ্রেফতার হন।

উল্লেখ্য বিশ্বের চোখ এড়াতে সক্ষম হলেও, আল-জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের গত ৬ ফেব্রুয়ারী এই সন্ত্রাসীকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। এরপরই মূলত বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করে এই অপরাধীকে খুঁজে বের করার সিদ্ধান্ত নেয়। অবশেষে ২৭ মে, ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর “মৃত্যুঞ্জয়ী পঁচিশ” ২৫ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ব‍্যাটালিয়নের পরিচালিত একটি অপারেশনে গ্রেফতার হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদ, শরীফ এবং আরাফাত

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews