ডেস্ক নিউজ।
দেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে এক লাখ এক হাজার ১৪২টি শূন্যপদ পূরণে চলতি সপ্তাহেই ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
নিয়োগপ্রক্রিয়া আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এনটিআরসিএ সূত্র জানিয়েছে, ১৬ জুন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন এবং ২২ জুন থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হতে পারে।
এনটিআরসিএ’র অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে এখন পর্যন্ত মোট শূন্যপদ দাঁড়িয়েছে ১,০১,১৪২টি। যার মধ্যে:
এত বিপুল সংখ্যক শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যদিও বিপুল শূন্যপদ সৃষ্টি হয়েছে, তবে সব নিবন্ধনধারীর আবেদন করার সুযোগ থাকছে না। এনটিআরসিএ সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক বলেন,
“বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালায় বয়স ও সনদ সংক্রান্ত বিষয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। আমরা নিয়মের বাইরে যেতে পারি না।”
সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী:
এনটিআরসিএ সূত্র জানায়, টেকনিক্যাল কোনো জটিলতা না ঘটলে ১৬ জুনেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সম্ভব। তবে অনিবার্য প্রযুক্তিগত কারণে কিছু বিলম্ব হলে, জুনের শেষ সপ্তাহের মধ্যে অবশ্যই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
একজন এনটিআরসিএ কর্মকর্তা বলেন,
“গণবিজ্ঞপ্তির খসড়া প্রস্তুত। চূড়ান্ত যাচাই শেষ পর্যায়ে।”
বর্তমান নীতিমালা অনুসারে ৩৫ ঊর্ধ্ব শিক্ষকদের আবেদন নিষিদ্ধ থাকলেও, অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এই বয়সসীমা বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ? বিশেষ করে যখন দেশে এইচএসসি ও অনার্স শেষ করতে করতে অধিকাংশ প্রার্থীই প্রায় ৩০ বছরের কাছাকাছি পৌঁছে যান।
শিক্ষাবিদদের মতে, নীতিমালায় কিছুটা নমনীয়তা আনা হলে আরও অধিকসংখ্যক যোগ্য প্রার্থী শিক্ষকতায় অংশ নিতে পারতেন।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট চলমান। এই সংকটের ফলে শিক্ষার মান ও শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে।
এই গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যদি দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হয়, তাহলে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে বলেও মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বেসরকারি পর্যায়ে এক লাখের বেশি শিক্ষক পদ ফাঁকা থাকা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এনটিআরসিএ’র আসন্ন ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি তা মোকাবিলায় একটি বড় পদক্ষেপ হতে পারে। তবে এই নিয়োগ যেন বয়স-নীতির বিতর্ক, প্রযুক্তিগত জটিলতা, এবং দীর্ঘসূত্রতা ছাড়াই কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।