বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের বাঘারপাড়ায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামী তপন দেবনাথের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের ভাই সুব্রত কুমার নাথ বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় তপন দেবনাথকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
(৯জুলাই) বুধবার রাতে পুলিশ উপজেলার বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের ঘোষনগর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। ঘরের ভেতর লেপ-তোশক রাখা স্টিলের বাক্সের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত সুচিত্রা দেবনাথ (৫৮) উপজেলার বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের ঘোষনগর গ্রামের তপন দেবনাথের স্ত্রী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তপন দেবনাথকে (৬৪) আটক করে। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড হলে আদালতে পাঠায় থানা পুলিশ।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, তপন দেবনাথ ও সুচিত্রা দেবনাথ দম্পতির দুই মেয়ে এক ছেলে। ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়েছে। ছেলে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে যশোর শহরে থাকেন। বাড়িতে তপন দেবনাথ ও সুচিত্রা দেবনাথ থাকতেন। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, বুধবার সকালে সুচিত্রা দেবনাথকে দেখা যায়। এরপর তাঁর স্বামী তপন দেবনাথ যশোর শহরের উদ্দেশে রওনা হন। দুপুরে বাড়ি ফিরে তিনি স্ত্রীকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় চারপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
একপর্যায়ে তিনি নিজের টিনের দোচালা বসতঘরের ভেতরে রাখা স্টিলের বাক্স খুলে দেখতে পান, ভেতরে কাপড় ও বালিশে নিচে হাঁটু ভাঁজ করা অবস্থায় চিত্রা দেবনাথের মরদেহ রাখা রয়েছে। তখন তিনি থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে রাত নয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর রাত ১০টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে বাঘারপাড়া থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশ বলছে, সুচিত্রা দেবনাথের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ঠোঁটে হাল্কা কাটা দাগ রয়েছে। তাঁকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এরপর মরদেহ লুকাতে স্টিলের বাক্সে কাপড় ও বালিশ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী নিজেই মাথায় আঘাত করে স্ত্রীকে হত্যা করে মরদেহ বাক্সের ভেতর লুকিয়ে রেখেছিলেন। স্বামী তপন দেবনাথের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।