নিজস্ব প্রতিনিধি।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন মালঞ্চ ও চুনকুড়ি নদীর সংযোগ স্থলে অবস্থিত বেড়িবাঁধে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত রবিবার গভীর রাতে উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর স্লাইড গেট সংলগ্ন মথুরাপুর গ্রামের ঋষি পাড়ায় নদীর পাড়ে বসবাসরত ৪টি পরিবারের ঘরের মাঝ বরাবর ফাটল ধরে ফাঁকা হয়ে বসে গেছে। ফলে চারটি পরিবারের সদস্যরা ঘর ছেড়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে রাস্তার ওপর বসবাস করছে। দিন যত যাচ্ছে ভাঙন আতঙ্ক ততই বাড়ছে।
স্থানীয়রা বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁশের খাঁচা তৈরি করে এখানে ফেললে পলি জমে ভাঙন রোধ হবে। তা না হলে ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। সামনে পান্তা ভাসানো গোন আছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে সাথে বৃষ্টি হতে পারে আর বৃষ্টি হলে যেখান থেকে ফাটল শুরু হয়েছে সব নদীতে নেমে যাবে। এখানে স্লাইড গেটের পানি বের হওয়ার কারণে ঘোল পড়ে যার ফলে নদীর চরের মাটি সড়ে গেছে। যে কোন সময় বসে যেতে পারে। নদীর প্রবল স্রোতে ক্ষতি হতে পারে বসতবাড়ি, মসজিদ, মন্দির, স্কুল, মিঠা পানির পুকুর, রাস্তাঘাট, হাট-বাজারসহ ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান। দ্রুত সংস্কারের জন্য উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যাতে বিপদের হাত থেকে তারা রক্ষা পেতে পারে।
শ্যামনগরে চুনকুড়ি নদীর বেড়িবাঁধে বসত বাড়ি ভাঙন।
ভাঙন কবলিত পরিবারের আবু বক্কার গাজী, নেসার আলী গাজী, হামিদা খাতুন ও বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। নদীতে জাল ধরে মাছ,কাঁকড়া মেরে আমাদের সংসার চলে। গত রবিবার গভীর রাতে হটাৎ করে আমাদের ঘরের মাঝখান দিয়ে ফাটল ধরে নদীতে নেমে যাচ্ছে, কিন্তু ৪/৫ দিয়ে এক ফুটের বেশি জায়গায় জুড়ে ফাঁকা হয়ে মাটি সরে গেছে। খুব ভয়ে আছি কখন কি হয়। তাই ঘর দোর খুলে ফেলেছি এখন রাস্তার ওপর খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। আমাদের অন্য কোথাও জায়গা জমি নেই যে সেখানে গিয়ে বসবাস করবো।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি মেম্বর পাঠিয়ে খবর নিচ্ছি এখন কি অবস্থা। তারপর দ্রুত সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলব।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার (এসও) প্রিন্সি রেজা বলেন, ভাঙনস্থল পরিদর্শন করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা এসওকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। এবং ৪টি পরিবারকে আপততো বসবাসের জন্য একটি ঘর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে একটি জায়গা দেখে তাদের স্থানান্তর করা হবে। তিনি এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান।