নীলফামারীর জলঢাকায় প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই চলছে এনসিপির আয়োজিত “জুলাই ৩৬ বিজয় মেলা”। গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই মেলায় প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে ২০ টাকা। তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠিত এ আয়োজন এলাকাবাসীর জন্য ভোগান্তি ও অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।মেলায় প্রবেশের পর নাগরদোলা, মোটরসাইকেল শোসহ বিভিন্ন রাইড উপভোগ করতে দিতে হচ্ছে গলাকাটা ফি। বিভিন্ন পণ্যের দামও হতাশাজনক বলে জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।
আয়োজকরা দাবি করছেন, জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি ধরে রাখতে এই মেলার আয়োজন। তবে বাস্তবে মেলায় কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। বরং মেলা মাঠের পাশের শহীদ মিনার অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। দেখা গেছে, অনেকে জুতা পায়ে শহীদ মিনারে উঠছেন।মেলায় ডিজে গানের তালে তরুণদের নাচ, প্রচণ্ড শব্দে গান বাজানো এবং শব্দ দূষণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
অভিভাবকরা জানান, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।মাত্র ১০০ গজ দূরে একটি মাদ্রাসা, ২০০ গজ দূরে জলঢাকা কেন্দ্রীয় কবরস্থান এবং আশেপাশে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার পরও এমন হৈচৈপূর্ণ আয়োজন করায় স্থানীয়রা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।প্রতিদিন বাজার এলাকায় মেলাকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজার হাজার পথচারী।মেলার শুরুর পর স্থানীয়রা এ আয়োজন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া মেলেনি।
সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই অবৈধ মেলার আয়োজকরা ধান্দাবাজি করছে। তাদের উদ্দেশ্য সৎ হলে প্রবেশমূল্য নিত না। মঙ্গাপীড়িত এলাকায় মানুষের পকেট খালি করছে। আমি আইনের মাধ্যমে এ মেলা বন্ধ ও দায়ীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।”
মেলা কমিটির আহ্বায়ক রেজাউল করিম দাবি করেন, তাদের অনুমোদন রয়েছে। তবে কার কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি।এ বিষয়ে জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ আরজু মো. সাজ্জাদ বলেন, “মেলার অনুমতির কোনো কাগজ আমার হাতে আসেনি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন জানান, “উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।”
অন্যদিকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় বলেন, “জেলা পরিষদ মাঠে মেলা হচ্ছে এবং ২০ টাকার প্রবেশমূল্যের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।