গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী মডেল কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের আপিল মঞ্জুর হয়েছে। ২০২২ সালের ৬ জুলাই এমপিওভুক্তির আওতায় আসে। ঘুষের দাবি মেটাতে না পারায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এনামুল হক নিয়োগপ্রাপ্ত ১৪ শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেন।
পরে এমপিও বঞ্চিত শিক্ষক-কর্মচারীরা উচ্চ আদালতে লিভ টু আপিলের জন্য সিভিল পিটিশন দাখিল করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি মো. রেজাউল হক লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, ফুলছড়ি উপজেলার কালির বাজারে ১৯৯৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তৎকালীন উদাখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোহেবুল্যাহ সরকারের উদ্যোগে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করে অধ্যক্ষ হিসাবে ফিরোজ কবীরকে নিয়োগ দেন। ১৯ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু হলেও চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা আসেন এ কলেজে। দীর্ঘদিন শিক্ষকরা বিনা বেতনে কলেজটিতে পাঠদান করে আসছেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুর রহমান কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেন। মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুর রহমানের রোষানলে পড়েন অধ্যক্ষ ফিরোজ কবীর।
২০১২ সালে প্রয়াত ডিপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার প্রভাব খাটিয়ে এনামুল হককে অবৈধ পন্থায় কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্বে দেন। দায়িত্ব পেয়েই এনামুল হক মোটা অর্থের বিনিময়ে আগের নিয়োগকৃতদের বাদ দিয়ে নতুন করে ১৭শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেন।
এ সময় তিনি ১৪ শিক্ষক-কর্মচারীকে বিএনপি-জামায়াতের কর্মী হিসাবে কোণঠাসা করে রাখেন। ২০২২ সালে এমপিওভুক্তির আওতায় আসে কলেজটি। এ সময় এমপিও যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে ৪১ শিক্ষক-কর্মচারীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করার কথা থাকলেও এক কোটি টাকা ঘুষ না দেওয়ায় ১৪ শিক্ষক-কর্মচারীর নাম কাগজপত্র থেকে বাদ দেন অধ্যক্ষ এনামুল।পরে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়।
১৬ সেপ্টেম্ব চেম্বার জজ বিচারপতি মো. রেজাউল হক আপিলটি মঞ্জুর করে আগামী ৭ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ কোর্টে আপিল শুনানির দিন ধার্য করেন। আপিল মঞ্জুর করায় আট শিক্ষক ও ছয় কর্মচারী আশার আলো দেখছেন।