ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে টিকটক অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার পরমেশ্বরদী গ্রামের একটি মেহগনি বাগানে এই ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি পাশের সালথা উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর দাদা বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্তসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।ঘটনার বিবরণপুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের দাউদ বিশ্বাস (২৩)-এর সাথে টিকটকের মাধ্যমে ওই স্কুলছাত্রীর পরিচয় হয়।
পরিচয়ের সূত্র ধরে দাউদ ওই কিশোরীকে তেলজুড়ি এলাকায় দেখা করতে আমন্ত্রণ জানায়।আমন্ত্রণ পেয়ে কিশোরীটি সেখানে গেলে, দেখা-সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যায় দাউদ তাকে পরমেশ্বরদী গ্রামের ভদ্র মহাশয়ের মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়।
সেখানে দাউদসহ তিনজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। ওই ছাত্রী রাতে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে একটি ফোনে দাউদের মোবাইল নম্বর পেয়ে তারা তাকে ফোন করে।
প্রথমে ফোন কেটে দিলেও, পরে দাউদ জানায়, “আধা ঘণ্টার মধ্যে আপনাদের মেয়েকে পেয়ে যাবেন।” সেই অনুযায়ী, ছাত্রীর বাড়ির লোকজন তেলজুড়ি আসার পথে একটি ভ্যানে তাকে খুঁজে পায় এবং সরাসরি বোয়ালমারী থানায় যায়।
মামলা ও গ্রেপ্তারএ ঘটনায় পরদিন শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ছাত্রীর দাদা বাদী হয়ে দাউদ বিশ্বাসকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের দুই ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত দাউদ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে।
এরপর দাউদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অপর আসামি মো. আতর আলী শেখকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। আতর আলীও দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেপ্তার হওয়া দু’জনকেই গতকাল রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাদীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলা নেওয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং পলাতক অপর আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটিকে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছে।