নিজস্ব প্রতিনিধি।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ১২ নভেম্বরকে “উপকূল দিবস” ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। “উপকূলের জন্য হোক একটি দিন, জোরালো হোক উপকূল সুরক্ষার দাবি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের খোলপেটুয়া নদীর তীরে কোস্টাল ইয়ূথ নেটওয়ার্ক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কোস্টাল ইয়ূথ নেটওয়ার্কের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন দাসের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফারজানা ইসলাম, মাসুদ হাসান, মাহফুজুর রহমান ও সাহেব আলী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উপকূলে অফুরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলের বিপুল জনগোষ্ঠী জাতীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। তার সত্ত্বেও উপকূলের প্রায় ৫ কোটি মানুষ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। উপকূলের বহু এলাকা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে যুগের পর যুগ। উপকূলবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাষ্ট্রীয়ভাবে উপকূল দিবস ঘোষণা এখন সময়ের দাবি। উপকূল দিবস ঘোষণা করা হলে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে উপকূলের গুরুত্ব বাড়বে। এর মাধ্যমে উপকূলের সুরক্ষা ও সেখানকার জনগোষ্ঠীর অধিকার ও ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
মানববন্ধন থেকে জলবায়ু বিপন্ন উপকূল সুরক্ষায় স্থানীয় যুব জনগোষ্ঠী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস হিসাবে রাষ্টীয় স্বীকৃতি প্রদান, উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, লবণাক্ততার আগ্রাসন বন্ধ করা, টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, উপকূলবাসীর জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য পযাপ্ত সাইক্লোন সেন্টার স্থাপন, সুপেয় পানি নিশ্চিত করা, জাতীয় বাজেট উপকূলের জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রদান, দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় সরকারকে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান, সুন্দরবন ও তার জীব-বৈচিত্র্য সুরক্ষায় কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এ অঞ্চলের কৃষি জমি ও চিৎড়ি চাষের জন্য আলাদা আলাদা জোন তৈরি করে খাদ্য ব্যবস্থা রক্ষা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ প্রবণ এলাকা ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ‘ভোলা সাইক্লোন’ উপকূলে আঘাত হানে। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) মতে ভোলা সাইক্লোন পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ঙ্করতম প্রাণঘাতী একটি ঝড়। এজন্য ১২ নভেম্বর উপকূলবাসীকে স্মরণ করে পালন করা হয় উপকূল দিবস।