বিলাল মাহিনী, যশোর । বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ কবি এম এম নাজমুল হক ( বুনো নাজমুল যশোরী )১৯৪৭ সালের ১লা মে তৎকালীন যশোর জেলার নড়াইল মহকুমার ১২ নং বিছালী ইউনিয়নের চাকই গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৃত জিতু মোল্লা, মাতা বড়ু বিবি ,কবির দাদা আব্দুর জব্বার মোল্লা ছিলেন একজন প্রখ্যাত জারি গানের বয়াতি।
কবি বুনো নাজমুল ১৯৬২ সালে পায়গ্রাম কসবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফুলতলা খুলনা হতে কৃতিত্বের সাথে মেট্রিক পাশ করেন, তিনি ১৯৬৪ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ আইএসসি পাস করেন ,১৯৬৭ সালে যশোর এম এম কলেজ হতে বিএসসি , ১৯৭২ সালে নোয়াপাড়া কলেজ বিএ, পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি সাহিত্য এমএ অধ্যয়ন করেন ।কবি বুনো নাজমুল যশোরী ১৯৭১ সালে ভারতের দেরাদুন জেলার টান্ডুয়া ক্যান্টনমেন্ট হতে মুজিব বাহিনীর উচ্চতর ট্রেনিং নিয়ে দক্ষিণ নড়াইল ভৈরব পূর্ব জনপদে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন ।
তিনি মুজিব বাহিনীর একজন গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন ।তিনি স্বাধীনতা পরবর্তীকালে অভয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ছিলেন ।তিনি জে জে আই জুট মিলের সুপারভাইজার পদে চাকরি করেন , ফুলতলা এবং নোয়াপাড়া কলেজে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। গাজীপুর মাদ্রাসার খন্ডকালীন ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন । তিনি ১৯৯১সালের ২ ডিসেম্বর হতে মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজ নড়াইল এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন ।তিনি অসংখ্য কবিতা গান গান ও প্রবন্ধ লিখেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ মুক্তিবীনা ও হৃদয়লীনা গত ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমী অমর একুশে গ্রন্থ মেলা থেকে বুনো নাজমুল যশোরী “নির্বাচিত কবিতা “প্রকাশিত হয়েছে ।
তিনি ষাটের দশকের একজন প্রখ্যাত কবি ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ কবি এম এম নাজমুল হক ১৯৯৪ সালের ২৫ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৫ঃ৩০ মিনিটে নোয়াপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করেন মৃত্যু কালে তিনি দুই স্ত্রী চার পুত্র ও দুই কন্যা সহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে যান ।বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কবি বুনো নাজমুল এর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পান্ডুলিপি থেকে তার জেষ্ঠ পুত্র কবি নাঈম নাজমুল তার সাহিত্যকর্ম সমাজের কাছে তুলে ধরার জন্য চেষ্টা করছেন। আজকের এই ৩০তম মৃত্যু দিনে মরহুম কবি বুনো নাজমুলের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।