নিজস্ব প্রতিনিধি।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনের কলাগাছি পর্যটন কেন্দ্র এলাকার বাদুড়ঝুলি খালের পাশের গাছের ডাল থেকে উদ্ধার হওয়া সেই বৃদ্ধা শুকুরুন নেছাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ছেলে রফিকুল ইসলাম। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সুন্দরবন থেকে বৃদ্ধা নারী উদ্ধারের খবরটি রফিকুলের নজরে আসে এবং সে তার মাকে চিনতে পারে। সাথে সাথে মাকে নিতে যশোর জেলার মনিরামপুর এলাকা থেকে সাতক্ষীরা শ্যামনগরে ছুটে আসেন ছেলে রফিকুল। মাকে কাছে পেয়ে ছেলে রফিকুল তার মাকে উদ্ধার করা দুই জেলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) শ্যামনগর থানা থেকে মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। গত ১৩ই মার্চ সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বাদুড়ঝুলি খালের পাশে গাছের ডাল থেকে ওই বয়স্ক নারীকে উদ্ধার করে লোকালয়ে নিয়ে আসেন শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের দুই জেলে।
বৃদ্ধার ছেলের রফিকুল ইসলাম বলেন, তার মা কিছুটা মানসিক ভারসম্যহীন। এর আগেও কয়েকবার হারিয়ে গিয়েছিলেন। একবার এক বছর পর মাকে খুঁজে পেয়েছিলাম। আমি আমার মায়ের একমাত্র সন্তান। আমরা একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। আমাদের গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায়। আমার মামা সরকারি চাকরি করেন। পিতাও সরকারি চাকরি করতেন। আমার মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়াতে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় বাবার চাকরি চলে যায়। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে মা আমার সাথে যশোরের মনিরামপুরে থাকতেন। কিম্তু গত এক মাস দশ দিন আগে আমি যশোরের মনিরামপুর থেকে গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায় পারিবারিক একটি কাজে যাই। আমি যাওয়ার পর থেকে মা গ্রামের বাড়িতে আসার ইচ্ছা পোষণ করে। তার একদিন পর আমার স্ত্রী খবর দেয় মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি সেখানে ছুটে যাই এবং আশপাশে খোঁজাখুঁজি করি কিন্তু কোথাও মাকে খুঁজে পাইনি। এরপর বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে দিয়েও মাকে খুঁজে পায়নি। অবশেষে মাকে খুঁজে পেলাম। এবার থেকে মাকে চোখে চোখে রাখবো।
বড় বড় নদী পার হয়ে কিভাবে গহীন সুন্দরবনে পোঁছালো, সেখানে কতদিন ছিলেন, কি খেলেন আপনার মা এমন প্রশ্নের উত্তরে রফিকুল ইসলাম বলেন, মা এসব কিছুই বলতে পারছে না।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া ওই বৃদ্ধা নারীকে তার ছেলের রফিকুল ইসলাম শ্যামনগর থানা থেকে তার বাড়িতে নিয়ে গেছেন।