দেশের চলমান অচলাবস্থার মধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর দায়িত্ব নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং পদত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে এক অনির্ধারিত আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যদি তিনি সঠিকভাবে কাজ করতে না পারেন, তাহলে পদে থাকার যৌক্তিকতা কোথায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাব, প্রতিদিন রাস্তায় আন্দোলন, এবং রাষ্ট্রীয় কাজে বিভিন্ন পক্ষের অসহযোগিতা চলছে—তাতে তাঁর পক্ষে দায়িত্ব পালন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপদেষ্টা সূত্রে জানা যায়, সংস্কারের বিষয়েও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে হতাশা প্রকাশ করেন ইউনূস। তিনি উপদেষ্টাদের বলেন, তাঁরা যেন নতুন একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা ভাবেন, কারণ তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান।
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে ব্যালট ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটলে পুলিশ ও প্রশাসন তা ঠেকাতে পারবে কি না, তা নিয়ে তাঁর সন্দেহ রয়েছে। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু না হয়, তবে দায়ভার তিনিই নেবেন—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
এই আলোচনার পর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’য় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। সাক্ষাৎ শেষে রাতে বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার প্রস্তাবও দেন এবং একটি খসড়াও তৈরি হয়। যদিও ভাষণ চূড়ান্ত হয়নি, বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা হতে পারে বলে জানা গেছে।