রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড আসন্ন নির্বাচনকে বিলম্বিত করার অপচেষ্টা কি না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তার ধারণা, মিটফোর্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত।
মির্জা ফখরুল বলেন, “মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিমূলক কি না তা ভাবার যথেষ্ট কারণ আছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আসন্ন নির্বাচনকে বিলম্বিত করার অপচেষ্টায় করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।”
বিএনপি মহাসচিবের দাবি, মিটফোর্ডের ‘মর্মান্তিক ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে’। তিনি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং বলেন, এতে বিএনপির যারা জড়িত, তাদের দল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “ব্যক্তির অপকর্মের সাথে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।” তার ভাষ্যমতে, মামলায় যাদের নাম এসেছে, পরিবারের সাথে কথা বলে তিনি জেনেছেন যে ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততা নেই।
মির্জা ফখরুল মনে করেন, মিটফোর্ডের ঘটনা একটি ‘চিহ্নিত মহল দ্বারা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র’। তিনি এই ঘটনার বিচার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানান।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে আবার ফ্যাসিবাদের ধারায় ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মিটফোর্ডের ঘটনাটি যে পরিকল্পিত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ইন্টারনেটে একটি সুনির্দিষ্ট সময় ভিডিও ছড়ানো হয়।” তিনি মনে করেন, “পুলিশের ঘটনা থেকে বোঝা যায় এটি কোনো চাঁদাবাজির ঘটনা না, ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা; দলের চেয়ারপারসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য।” তিনি জাতীয় নির্বাচনকে প্রতিহত করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে আগ্রহীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “সুপরিকল্পিতভাবে দেশের শীর্ষ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে। তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানাই।” অপরাজনীতি প্রতিরোধে সরকারের ‘উদাসীনতার বিরুদ্ধে’ তিনি নিন্দা জানান। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, এসব ‘অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছে স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো’। তিনি সবাইকে ‘সংঘাত সৃষ্টির উসকানিতে পা না দেওয়ার’ আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের সড়কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।