ডেস্ক নিউজ।
গ্রেফতার নিয়ে স্বেচ্ছাচার রোধে ফৌজদারি কার্যবিধিতে বড় ধরনের সংস্কার এনেছে সরকার। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, সন্দেহের ভিত্তিতে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে এখন থেকে পুলিশ কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে হবে কেন তিনি ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছেন। এছাড়া গ্রেফতার সংক্রান্ত জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে যুক্ত হয়েছে একাধিক বাধ্যবাধকতা।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “৫৪ ধারায় আগে শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে মানুষকে ইচ্ছেমতো গ্রেফতার করা হতো। এখন এই ধারায় গ্রেফতার করতে হলে পুলিশের কাছে অপরাধ চোখের সামনে দেখার প্রমাণ এবং সেই ব্যক্তি অপরাধে জড়িত— এমন বিশ্বাসযোগ্য কারণ থাকতে হবে। এই ব্যাখ্যা লিখিত আকারে দিতে হবে।”
তিনি জানান, নন-কগনিজেবল অপরাধের ক্ষেত্রেও একই বিধান কার্যকর থাকবে। গ্রেফতারকারী কর্মকর্তাকে অবশ্যই ইউনিফর্মে নামপ্লেট এবং আইডি কার্ডসহ পরিচয় দিতে হবে। আইডি কার্ড চাহিদামাত্র দেখাতে হবে। গ্রেফতারের পর ১২ ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবার, আইনজীবী বা পরিচিতদের অবহিত করতে হবে।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির আঘাত বা অসুস্থতা থাকলে, দ্রুত চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে সংশোধনীতে।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, “প্রতিটি গ্রেফতারের ক্ষেত্রে একটি ‘মেমোরেন্ডাম অব অ্যারেস্ট’ সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যেখানে অভিযোগ, গ্রেফতারকারী, আইনের ধারা ইত্যাদি বিস্তারিত থাকতে হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, আগের সরকার আমলে বিভিন্ন সংস্থা একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে গ্রেফতারের দায় এড়িয়ে যেত। নতুন আইনে বলা হয়েছে, যে সংস্থাই গ্রেফতার করুক, গ্রেফতার সংক্রান্ত সব তথ্য তাদের নিজস্ব অফিস এবং সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠাতে হবে।
সংশোধিত আইনে অনলাইন বেল বন্ড সাবমিশন, ডিজিটাল সমন জারি ও বিচারিক তদারকির ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা মনে করেন, এসব ব্যবস্থা ইচ্ছেমতো গ্রেফতার, অস্বীকার এবং গুমের প্রবণতা রোধে ‘যুগান্তকারী ভূমিকা’ রাখবে।