দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্রতিদিন নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে এবং এরিমধ্যে চরাঞ্চলে পদ্মা নদীর দু-পাড়ে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। বন্ধ রাখা হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান, তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক ও ফসলি জমি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৪.৭২ সেন্টিমিটার (বিপদসীমা ১৫.৭০ সেন্টিমিটার)। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১২.৯০ সেন্টিমিটার, (বিপদসীমা ১৩.৮০ সেন্টিমিটার) যা বিপদসীমা থেকে ৯৮ সেন্টিমিটার কম। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এবং উজান থেকে গঙ্গা নদীর প্রবাহ বাড়তে থাকলে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়তে থাকবে। ফলে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা করছেন পাউবো কর্মকর্তারা।
সপ্তাহ খানেক ধরে পদ্মার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে চরাঞ্চলের প্রায় কয়েক‘শ হেক্টর জমির মরিচ, সবজি, কলা, ভুট্টা, ধান ও পাটের ক্ষেত তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
৬ নং চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, চলাচলের সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে ইউনিয়নটি মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাড়িঘরেও পানি ঢুকে পড়বে।
৫ নং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, নদীর ওপারে বসবাসরত প্রায় ২০/২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহম্মেদ জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মোট ১৩টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়গুলো খোলা রাখা হচ্ছে যাতে বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদমো. নুরুল ইসলাম জানান, বন্যার পানিতে চরাঞ্চলের ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে মরিচ ক্ষেত, সবজি,ভুট্টা,ধান, পাটও কলার বাগান ক্ষতির মুখে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চারটি ইউনিয়ন ক্ষতির মুখে পড়েছে। ৬ নং চিলমারী এবং ৫ নং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যে কোন পরিস্থিতির জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।