ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পানাইল গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান প্রমাণ করেছেন—ভালো জামদানি শুধু নারায়ণগঞ্জেই হয় না। গ্রামের একটি ছোট টিনের ঘরে ছয়টি তাঁত বসিয়ে মাসে ২৫টি পর্যন্ত জামদানি শাড়ি তৈরি করছেন তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা।
মোস্তাফিজুরের ৩০ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট প্রস্থের ঘরেই সারিবদ্ধভাবে কাজ করেন ১২ জন কারিগর। এই কারখানার নাম দিয়েছেন তিনি ‘মুসলিম জামদানি ঘর’। শাড়িগুলো বিক্রি হয় স্থানীয় বাজারে ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীতেও।
২০০৭ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে রূপগঞ্জে গিয়ে জামদানি বুনন শেখেন মোস্তাফিজুর। ১৪ বছর কাজ করার পর ২০২১ সালে নিজ গ্রামে ফিরে এসে নিজ উদ্যোগে তাঁত বসান। বর্তমানে স্ত্রী নিলা বেগমসহ ১২ জন কারিগর কাজ করছেন তাঁর কারখানায়।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন এবং প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। প্রতিটি শাড়িতে ২ হাজারের বেশি রেশমি সুতা ব্যবহৃত হয়, যা রাজশাহী থেকে কেনা হয়।
জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁত বোর্ডের ফরিদপুর অঞ্চলে কোনো প্রশিক্ষণকেন্দ্র না থাকলেও তাঁত বোর্ড তাঁকে একটি সমিতি গঠনের পরামর্শ দিয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও ক্রেতারা বলছেন, মোস্তাফিজুরের তৈরি জামদানির মান নারায়ণগঞ্জের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিয়া আসাদুজ্জামান বলেন, “মোস্তাফিজুর আমাদের এলাকার গর্ব। তাঁকে কেন্দ্র করে একটি জামদানি শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলা উচিত।