বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক।
জুলাই গণঅভ্যুত্থয়ের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হবে। বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। ঐতিহাসিক এ রায় সরাসরি দেখতে পারবে দেশ–বিদেশের দর্শক।
রায় সম্প্রচার করবে দেশের সব গণমাধ্যম বিটিভির মাধ্যমে, যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সেও দেখানো হবে। পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় এই বিচারকাজ প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকাল ৮টার পর থেকেই বিটিভির বিশেষ টিম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়, আর মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নিয়েছেন দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা।
রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে রোববার সন্ধ্যার পর দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয় এবং সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়।
গত ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করে ট্রাইব্যুনাল। ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা এবং নয় কার্যদিবসে প্রসিকিউশন ও ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়। ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান ও প্রসিকিউশনের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায় নির্ধারণের সময় দেওয়া হয়।
মোট পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় তিন আসামির বিরুদ্ধে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখাঁরপুলে হত্যা ও আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে রয়েছে ব্যাপক দালিলিক তথ্য, প্রমাণ ও শহীদদের তালিকা। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৮৪ জনকে। রাজসাক্ষী হওয়ায় আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, যদিও তাঁর খালাস চেয়েছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। অন্যদিকে শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছে প্রসিকিউশন।