1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
বিজয়ের মাস এই ডিসেম্বরেই ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শালিখার মাটিতে শহীদ হন - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১২:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩৬ কোটি টাকার স্কলারশিপে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাচ্ছেন মীম বাবার ওপর অভিমান করে সিলেটে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যা জিম্মি মুক্তি না হলে যুদ্ধ চলবে: ইসরায়েলি সেনাপ্রধান সাবেক প্রতিমন্ত্রী কোরবান আলীর ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ অপহরণের দুই দিন পর পুলিশি অভিযানে বান্দরবানে ৭ বছরের এক শিশু উদ্ধার কক্সবাজারে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি: নিহত ৫ ‘যে গাছে ফরহাদের ছবি আছে, সেই গাছের নিচে শপিং ব্যাগে টাকা রেখে যাবি’ জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে পঞ্চগড় জেলা ছাত্রশিবিরের “জুলাই দ্রোহ” বাঘারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে প্রথম সভা করলেন নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ শেরপুর–মৌলভীবাজার মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় যুবক নিহত

বিজয়ের মাস এই ডিসেম্বরেই ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শালিখার মাটিতে শহীদ হন

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৪৯৩ জন খবরটি পড়েছেন
Talkhori Sohid minar

লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল,শালিখা(মাগুরা)থেকে


বাংলাদেশের বিজয়ের মাস এই ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই ডিসেম্বর মাসেই শালিখার তালখড়ি, হাজরাহাটি ও ছয়ঘরিয়ার মাটিতে শহীদ হয়েছিল ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এই ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মম নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের লাশ শেয়াল কুকুরে খাবলানোর পর গনকবরে মাটি চাপা দিয়ে দায় সারা হয়েছিল।

এই ২৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শালিখার মাটিতে চিরশায়িত থাকলেও তাদের সেই স্মৃতি ধরে রাখার জন্য স্বাধীনতার ৫০বর্ষ উত্তীর্ন হলেও কোন ব্যাবস্থা না হওয়া বাঙালী জাতির কাছে বড় ব্যথা,বেদনা ও লজ্জাস্কর ছাড়া আর কিছুই না।

শালিখা উপজেলার তালখড়ি গ্রামে ১৯৭১ সালের এই ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখে পাকসেনা দোসর আলবদর রাজাকাররা ১৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে গনকবর দিয়ে রেখেছিল। এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী এবং তৎকালীন সাবেক তালখড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ মন্ডল তার জীবোদ্দশায় তার কাছে আমি নিজেই জানতে গিয়ে দেখেছি ব্যাথাভরা হৃদয়ে এসব বিষয়ের বিষদ বর্ননা দিতেন।

দেশ মুক্ত হওয়ার পর শালিখা থানা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি স্মৃতিফলক নির্মান করে পাকা বেষ্টনী দিয়ে রাখল্ওে সেখানে পবিত্রতা রক্ষার তেমন কোন সুব্যাবস্থা ছিল না। তবে পরবর্তীতে স্মৃতিফলকটি কিছুটা দৃষ্টিনন্দন করে ১৩ শহীদের নামফলক বসানো হয়। প্রতিবছর বিজয় দিবস এলে কোন রকম রংতুলি দিয়ে এখানে নামে মাত্র মাল্যদান করে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

তালখড়ির এই স্মৃতিসৌধ ছাড়া উপজেলার হাজরাহাটিতে ৮ মুক্তিযোদ্ধার গনকবরেও কোন স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়নি। কোন স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়নি ছয়ঘরিয়ার গলাকাটা ব্রীজে চিরশায়িত ৬ মুক্তিযোদ্ধার গনকবরেও। ছয়ঘরিয়ার গলাকাটা ব্রীজে চিরশায়িত ৬ মুক্তিযোদ্ধার গনকবরের চিহ্ন টুকুও নিশেঃষ হয়ে গেছে।

রাজাকার সমর্থিত কিছু ব্যক্তির বিভ্রান্তিকর মন্তব্যে ছয়ঘরিয়ার গলাকাটা ব্রীজে চিরশায়িত ৬ মুক্তিযোদ্ধার যে ২ টি গনকবর যাদের কারনে নিশেঃষ হয়ে যাচ্ছে ধিক তাদের মুখে। দেশ মাতৃকার মুক্তি কামনায় সেই সব বীর সন্তানদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজ স্বাধীন দেশের মুক্ত বাতাসে তাদের স্মৃতিটুকুও যদি বিলীন হয়ে যায় তাহলে জাতির এ লজ্জা ঢাকার মত কি আছে!

শালিখার হাজরাহাটির গনকবরে চিরশায়িত ৮ মুক্তিযোদ্ধা যদুনাথ গুহ, পঞ্চানন পাল, হরিপদ দাস, নিত্যানন্দ ভদ্র, মনোরঞ্জন দত্ত, নারুগোপাল রায়, সুসেন রায় ও একজন অজ্ঞাত। এরা মাতৃভূমির মুক্তি কামনায় ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে নিজভূমে ফরিদপুর অঞ্চলে যাচ্ছিলেন। সময় ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার।

যশোর মাগুরা অঞ্চল পাকসেনা মুক্ত ভেবে নির্বিঘ্নে শালিখা থানার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পাকসেনা দোসর আলবদর রাজাকাররা খবর পেয়ে জুনারী গ্রামের মাঝ থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়। হাজরাহাটি গ্রামের পার্শ্বে চিত্রানদীর তীরে তাদেরকে প্রথমে পিটিয়ে হত্যা করার পরেও গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে রাজাকাররা খোলা আকাশের নিচেই তাদের ফেলে যায়।

এক দিন অতিবাহিত হওয়ার পর গলিত লাশ কতিপয় গ্রামবাসি চিত্রা নদীর ধারে সারি করে শুয়ায়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখে। পরবর্তীতে কয়েকজন বেষ্টনী দিয়ে কবর রক্ষা করে।

স্বাধীনতার দির্ঘ দিন পর জঙ্গল পরিস্কার করে তাদের অমর আত্মার শান্তি কামনা করা হলেও অদ্যাবধি সেখানে কোন স্মৃতিফলক নির্মান করা হয়নি। শুধুমাত্র ইটের বেষ্টনী দিয়ে নদীর দিকে নিচেই দায়সারা গোছের একটা নাম ফলক বসানো রয়েছে যা কারো দৃষ্টিতে আসে না।

উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের গলাকাটা ব্রীজের পাশে এমনি ৬ মুক্তিযোদ্ধার গনকবর রয়েছে। ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর এই ৬ মুক্তিযোদ্ধা পার্শবর্তী রামকান্তপুর গ্রামের বিলের মাঝ দিয়ে নৌকা বেয়ে নিজ অঞ্চল বুনাগাতীর দিকে যাচ্ছিলেন।

হঠাৎ পাকসেনা দোসর আলবদর রাজাকাররা খবর পেয়ে প্রথমে তাদেরকে ধরে এনে নির্মমভাবে বেয়নেট চার্চ করে।এরপরে তাদের নিজ হাতে কবর খুঁড়তে বাধ্য করে এবং ২ কবরে ৬ জনকে শুইয়ে গুলি করে হত্যা করে। নির্মম অত্যাচারের সময় তাদের গালে পিপাসায় প্রসাব করে দেয়া হয়। এমনি নৃশংস হত্যার পর তাদের কবর সামান্য মাটি চাপা দিয়ে রাজাকাররা চলে যায়।

এসব গলিত লাশ শেয়াল কুকুরে খুঁড়ে মাংশ খুবলে ভক্ষন করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরনে জানা যায়। এই ছয়ঘরিয়ার গনকবরে যে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা চীরনিদ্রায় শায়িত তারা হলেন- শালিখার দেশমুখপাড়া গ্রামের সৈয়দ আকরাম হোসেন, মমিন উদ্দিন, মান্নান জমার্দার, হাটবাড়ীয়া গ্রামের আঃ রউফ বিশ্বাস ও মুহাম্মদপুর এলাকার ২ জন(অজ্ঞাত}।

এসব শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্ষমতা যদি আজও বাঙ্গালী জাতীর না হলো তবে এ স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্ত দান শুধুই কি নাম মাত্র।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews