1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
আজ বৃটিশ বিরোধী আন্দলনের বিপ্লবী নেতা বিজয় চন্দ্র রায়ের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

আজ বৃটিশ বিরোধী আন্দলনের বিপ্লবী নেতা বিজয় চন্দ্র রায়ের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী

  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৫৮০ জন খবরটি পড়েছেন
বিপ্লবী নেতা বিজয় চন্দ্র রায়

আজ যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার কিংবদন্তি রাজনীতিক, শিক্ষানুরাগী, বিপ্লবী নেতা বিজয় চন্দ্র রায়ের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। দীর্ঘদিন ভারতীয় কংগ্রেসের যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার আমন্ত্রণে ১৯৩৭ সালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আমাদের অঞ্চলে আগমন করেছিলেন। বিজয় রায়ের সংগ্রামী জীবনের অবসান হয় ১৯৮২ সালের ৭ জানুয়ারি । এই মহাত্মার পারলৌকিক জীবনের শান্তি কামনা করি।

“মরণ সাগর তীরে তোমরা অমর তোমাদের স্মরি।”

বিপ্লবী নেতা বিজয় চন্দ্র রায়  বাংলা ১৩০৬ সনে বাঘারপাড়া উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নের বন্দবিলা গ্রামে বিজয় রায়ের জন্ম। পিতা তৎকালীন জমিদার ষষ্ঠীবর রায় ও মা মোক্ষমা সুন্দরী দেবী। ১৪ বছর বয়সে লীলাবতীকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান কল্যাণী রানী রায়।

শিক্ষাজীবনে তিনি নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিজয় রায় বিএ পাশ করেন। এসময় তিনি অনুভব করেন শিক্ষা লাভ করা ছাড়া কোনো জাতির উন্নতি সম্ভব নয়। এই চিন্তা থেকে তিনি ১৯৩১ সালে বন্দবিলায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ৭০ বিঘা জমি দান করে ১৯৬১ সালে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয়টি এখন বন্দবিলা বিজয় চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে পরিচিত। এছাড়াও বিজয় রায় তৎকালীন সময়ে বেতালপাড়া সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বাজার প্রতিষ্ঠায় জমি দান করেন ।

অন্যদিকে, যশোর সরকারি এম এম কলেজের প্রতিষ্ঠালগ্নে অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাতা সদস্য, সরকারি হোমিও কলেজের জমিদাতা ও খাজুরা সরকারি শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেন মহাবিদ্যালয়ের স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

ছাত্র জীবন থেকেই তিনি জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে। এসময় তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হন। পরে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সার্বক্ষণিক রাজনীতিতে যোগ দেন।তিনি তৎকালীন কংগ্রেসের বৃহত্তর যশোর জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন । সেসময় বাঘারপাড়া অঞ্চলে কৃষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে ব্রতী হয়ে তাদের পাশে দাড়ান। তিনি ব্রিটিশদের খাজনা না দিতে বিজয় রায় প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাদেরকে অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় করেন তিনি। নিজ হাতে তাত বানিয়ে কাপড় পরতেন বিজয় রায় এবং ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের জন্য আন্দোলন শুরু করেন।

 বৃটিশ বিরোধি আন্দলনের কারনে সরকারের তীব্র রোষানলে পড়েন বিপ্লবি এই নেতা। একারনে সময় ব্রিটিশ সৈন্যরা তৎকালীন বন্দবিলা গ্রামের হরিদাস গাঁঙ্গগুলির বাড়িতে ক্যাম্প তৈরি করে। ফলে ব্রিটিশদের সাথে এ অঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বড়খুদড়া গ্রামে এক ব্রিটিশ সৈন্য মারা যায়। এরপর থেকেই এলাকায় ব্যাপক দমন, পীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ব্রিটিশ সরকার এবং বিজয় রায়কে গ্রেফতার করেন। পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় জেলখানায় অন্তরীন থাকেন। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর মুক্তি মিললেও আরো কয়েকবার গ্রেফতার হন।

আন্দোলন ও পরিবর্তিত পরিস্থিতি দেখতে ১৯৩৭ সালে ভারতীয় কংগ্রেসের কিংবদন্তী নেতা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বন্দবিলায় আসেন। বিজয় রায়ের দূরদর্শিতার কথা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট পর্যন্ত আলোচনা হয়।

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্ত হলে বিজয় রায় পূর্ব পাকিস্থানে কংগ্রেসের দলীয় কার্যক্রম এগিয়ে নিতে শুরু করেন। যে কারণে কংগ্রেসের বৃহত্তর যশোর জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। কংগ্রেস নেতা নড়াইলের নেতা সৈয়দ নওশের আলী, যশোরের কেশবপুর উপজেলার পশুপতি বোস ও রবি সরকার, বাঘারপাড়ার মির্জাপুর গ্রামের কাজী আব্দুল গণি এবং কৃষক নেতা যাদবপুর গ্রামের মাস্টার নুরুল ইসলাম বিজয় রায়ের সান্নিধ্যে রাজনীতি করতেন।

পাকিস্থান আমলে বিজয় রায় বন্দবিলা বোর্ড অফিস রাখার আন্দোলন করে সফল হন। তখন যশোর শহরের আর.এন রোডে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় ছিলো। যা বিজয় রায়ের সম্পত্তি। ১৯৭৭ সালে সরকার এটির দখল নেয় এবং সেই সম্পত্তিতে হোমিও কলেজ প্রতিষ্টিত হয়। দেশ স্বাধীনের পর বিজয় রায় দেশের উন্নয়নে পুনর্বাসন কাজে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, তৎকালীন হরিদাস গাঙ্গগুলির পদবী পরিবর্তিত হয়ে ‘রায় সাহেব’ হন। তার সেই বাড়িটি এখনো বন্দবিলা গ্রামে কালের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। জরাজীর্ণ বাড়িটি ২০২১ সালে সংস্কার করে দৃষ্টিনন্দন পাঠাগারে রুপ দিয়েছে বাঘারপাড়া উপজেলা প্রশাসন। আজ বিকেলে বিজয় চন্দ্র রায় স্মৃতি পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ পারিবারিকভাবে স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়।

বিপ্লবী নেতা বিজয় চন্দ্র রায় স্মৃতি পাঠাগার

সংগ্রামী এই নেতার কথা আজও এলাকার মানুষ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। মানবিক পৃথিবী বিনির্মাণের লড়াইয়ে বিজয় রায় আজীবন আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews