1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
ইসলামে দাঁড়ি রাখার বিধান ও বাস্তবতা - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মদনে ৬০০ পিস ইয়াবাসহ পুলিশের জালে ধরা পাঁচ মাদক কারবারি মিরসরাইয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে শতাধিক দোকানপাট উচ্ছেদ নুরুল হক নূরের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার নীলফামারীতে ভারতীয় ট্যাবলেটসহ মা-ছেলে গ্রেফতার মৌচাকে মসজিদে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ৫ বছর পর সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন কারাগারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসরভাতা ৬ মাসের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ শ্যামনগরে খোলপেটুয়া নদীর দেবে যাওয়া চরে জিও বস্তা ডাম্পিং সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মৎস্য শিকারের সময় আট জেলে আটক ফের স্বর্ণের দাম বেড়ে ভরি ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা

ইসলামে দাঁড়ি রাখার বিধান ও বাস্তবতা

  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৩৫৭ জন খবরটি পড়েছেন

বিলাল হোসেন মাহিনী।।

ইসলামে দাঁড়ি রাখার বিধান ও বাস্তবতাইসলাম আল্লাহ’র বিধানাবলীর নাম। সুতরাং ইসলামের কোনো বিধানকে অবজ্ঞা করা বা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পালন না করার মানে হলো ঐ বিধানের সাথে কুফরি বা ফাসেকি করা। কুফর অর্থ অস্বীকার করা আর ফাসেক হলো পাপাচার। সুতরাং যে ব্যক্তি ইসলামের কোনো একটি বিধানকে অবজ্ঞা বা অস্বাীকার করলো, সে কুফরি করলো আর যে তা পালন করলো না, সে ফাসেকি করলো তথা- উক্ত কর্ম (আমল) সম্পাদন না করে গোনাহ কামাই করলো।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ স. এর জীবনের তথা ইসলামি শরীয়তের অন্যতম একটি বিধান হলো- ‘দাঁড়ি রাখা’। কিন্তু আমাদের সমাজে বহু মুসলিম ইচ্ছাকৃত দাঁড়ি রাখেন না, আবার কেউ কেউ অবজ্ঞাও করেন। কেউ আবার সামর্থ্য থাকার পরও দাঁড়ি রাখেন না। শুধু তাই নয়, এমন অনেক মসজিদ মাদরাসা আছে, যার পরিচালনা কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ দায়িত্বশীলদের মুখে দাঁড়ি নেই। ভাবা যায়! দাঁড়ি রাখা যেখানে শরীয়তের ওয়াজিব ইবাদত, সেখানে দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের মুখে দাঁড়ি নেই।

একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, যিনি নিয়মিত দাড়ি কাটেন বা ছাঁটেন, গবেষণা বলছে- তিনি সারা জীবনে গড়ে ৩ হাজার ৩৫০ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেন দাড়ি কাটার পেছনে। দিনের হিসাবে প্রায় ১৩৯ দিন। ইসলামী সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন দাড়ি। পুরুষের বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। দাড়ি রাখার মাধ্যমে পুুরুষের মুখের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। দাড়ি শুধু পুরুষের বীরত্বের পরিচয়ই বহন করে না বরং ইহা আল্লাহর ভয়ের অন্যতম নিদর্শনও বটে। দাড়ি রাখা প্রিয় নবি সা.এর একটি বিশেষ সুন্নাত।

রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা দাড়ি লম্বা করো এবং মোচ ছোট করো।’ দাড়িসংক্রান্ত এ বিশুদ্ধ হাদিস একাধিক হাদিসগ্রন্থে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। রাসুল সা. নিজেও দাড়ি রাখতেন। তাঁর দাড়ি ছিল কালো, গভীর, ঘন ও প্রশস্ত। তাঁর বক্ষ মোবারক দাড়িতে ভরে যেত। ইসলাম ধর্ম মতে, দাড়ি রাখা ওয়াজিব। চার মাজহাবের কোনো মাজহাবে এ নিয়ে বিতর্ক নেই।

দাড়ি না রাখার ক্ষতি দাড়ি না রাখার অসংখ্য ক্ষতি রয়েছে :
এক. দাড়ি মুড়ানো বা ছোট করা মুশরিক, অগ্নিপূজক ও বিধর্মীদের অভ্যাস। আর মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হারাম। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কোনো জাতির সাদৃশ্য (বেশভূষা, আকার-আকৃতি) অবলম্বন করে, সে ওই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে।’ (জামে ছগির, ২/৮)।
দুই. দাড়িবিহীন চেহারা নারীজাতির চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে। এ ধরনের সামঞ্জস্য অবলম্বন করা হারাম।
তিন. এর ফলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অবাধ্যতা প্রদর্শন হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’ (সুরা জিন, ২৩)
চার. দাড়ি না রাখার মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন ও বিকৃতি ঘটানো হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই।’ (সুরা রুম, ৩০)।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ স. এর জীবনের তথা ইসলামি শরীয়তের অন্যতম একটি বিধান হলো- ‘দাঁড়ি রাখা

পাঁচ. দাড়ি না রাখলে অবিশ্বাসীদের অনুসরণ করা হয়। অথচ আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসীদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ বিধানের ওপর। সুতরাং তুমি এর অনুসরণ করো; অজ্ঞদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করো না।’ (সুরা জাসিয়া, ১৮)।

ছয়. দাড়ি না রাখলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। সাত. সুরা-কেরাত শুদ্ধ থাকলেও আজান-ইকামতের যোগ্যতা ও সুযোগ থাকে না। আট. নবীজির অন্তরে আঘাত দেওয়া হয়। নয়. অন্যান্য পাপ একবার করলে একবারই গুনাহ লেখা হয়। কিন্তু দাড়ি না রাখলে সব সময় গুনাহ লেখা হতে থাকে। কেননা এটা গুনাহে জারিয়া বা চলমান গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। দশ. কবরে মুনকার-নাকিরের প্রশ্ন-উত্তর কঠিন হয়ে যায়।

দাড়ি রাখার উপকারিতা : এক. দৃষ্টিশক্তি ঠিক থাকে। ফলে ভালোভাবে কুরআন তেলাওয়াত সম্ভব হয়। দুই. দাড়ি থাকলে মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকা যায়। অবৈধ কাজে অংশগ্রহণে লজ্জাবোধ হয়। তিন. মুমিন হিসেবে পরিচিত হওয়া যায়। নতুবা মুমিন-কাফির, পার্থক্য করা কঠিন হয়ে যায়। চার. অপরিচিত স্থানে মারা গেলে মুসলমান হিসেবে সসম্মানে গোসল ও দাফন-কাফন নসিব হয়। পাঁচ. হাশরের ময়দানে রাসুলের উম্মত দাবি করা সহজ হবে এবং তাঁর সুপারিশ লাভ সম্ভব হবে।

মাওলানা আশেকে ইলাহি মিরাঠি (রহ.) তাঁর ‘ডারহি কি কদর ও হিকমত’ নামের বইয়ে লিখেছেন : ইউনানি চিকিৎসবিজ্ঞান অনেক আগেই এ সিদ্ধান্ধে উপনীত হয়েছে যে দাড়ি পুরুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। গলা ও বক্ষকে ঠা-া ও গরম থেকে রক্ষা করে । আধুনিক ডাক্তারদের মধ্যে একজন লিখেছেন : সব সময় দাড়িতে ক্ষুর চালালে চোখের শিরার ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এতে চোখের জ্যোতি ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসে। অন্য এক ডাক্তার লিখেছেন : দাড়ি জীবাণুকে শরীরের ভেতরে ঢুকতে প্রতিবন্ধতার সৃষ্টি করে। তাকে গলা, বক্ষ পর্যন্ত অতিক্রম করতে বাধা দেয়। দাড়ি না রাখা যৌনশক্তি শূন্যের কোঠায় পৌঁছে দেয়। এক ডাক্তার লিখেছেন, যদি সাত প্রজন্ম পর্যন্ত কোনো বংশের পুরুষদের মধ্যে দাড়ি মুড়ানোর অভ্যাস চালু থাকে, তাহলে অষ্টম প্রজন্মের সন্তান দাড়িবিহীন হবে। এর কারণ হলো, এর ফলে প্রত্যেক প্রজন্মে যৌনশক্তি হ্রাস পেতে পেতে অষ্টম জেনারেশনে একেবারে শূন্যের কোঠায় পৌঁছে যাবে । বিবিসির এক অনুষ্ঠান- ট্রাস্ট মি, আই অ্যাম এ ডক্টর– সম্প্রতি এই প্রশ্নে একটা ছোট্ট পরীক্ষা চালিয়েছে। এর ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্লিন শেভড পুরুষের চেয়ে দাড়িওয়ালাদের মুখে রোগ-জীবাণু বেশি, এমন কোনো প্রমাণ তারা পাননি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতাল সম্প্রতি এ নিয়ে গবেষণা চালায়।

‘জার্নাল অব হসপিটাল ইনফেকশনে’ প্রকাশিত এই গবেষণার ফলে বলা হচ্ছে, দাড়িওয়ালাদের চেয়ে বরং দাড়ি কামানো পুরুষের মুখেই বেশি রোগ-জীবাণু পাওয়া গেছে। গবেষকরা বলছেন, মেথিসিলিন-রেসিস্ট্যান্ট স্ট্যাফ অরিয়াস (এমআরএসএ) বলে যে জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী, সেটি দাড়িওয়ালাদের চেয়ে দাড়ি কামানোদের মুখে তিন গুণ বেশি মাত্রায় পাওয়া গেছে। এর কারণ কী? গবেষকরা বলছেন, দাড়ি কামাতে গিয়ে মুখের চামড়ায় যে হালকা ঘষা লাগে, তা নাকি ব্যাকটেরিয়ার বাসা বাঁধার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। অন্য দিকে দাড়ি সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে। বিবিসির ‘ট্রাস্ট মি, আই অ্যাম এ ডক্টর’ অনুষ্ঠানে বেশ কিছু পুরুষের দাড়ি থেকে ব্যাকটেরিয়ার নমুনা সংগ্রহ করে একই ধরনের পরীক্ষা চালানো হয়।কুরআন-সুন্নাহ ও আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, দাড়ি রাখার মাধ্যমে শরীর সুরক্ষা এ বং আল্লাহ ও তার প্রিয় রাসুলের স. সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। এ দাড়িই কেয়ামতের দিন অন্ধকারের সময় নুরে ঝলকাতে থাকবে। ঈমান ও আমল ঠিক থাকলে দাড়ি রাখা ব্যক্তিদের হাসর হবে নবি-রাসুলগণের সাথে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দাড়ি রাখার মাধ্যমে প্রিয় নবি সা.-এর নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিলাল হোসেন মাহিনী পরীক্ষক : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ও প্রভাষক : গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা, যশোর।bhmahini@gmail.com

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews