পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতকে (কাদিয়ানি) নিষিদ্ধ ও তাদের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করার সময় পুলিশ ও মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৩ মার্চ) জুমার নামাজের পর মুসল্লিরা মিছিল বের করলে এ ঘটনা ঘটে।
পঞ্চগড় শহরের শের-ই বাংলা পার্ক সংলগ্ন মহাসড়কে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় একজন মুসল্লি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিকসহ প্রায় ৫০ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালীন বেশকিছু বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। অপরদিক থেকে মুসল্লিরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
মুসল্লি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে সমবেত হন। পরে তারা মিছিল বের করেন। শের-ই বাংলা পার্ক সংলগ্ন মহাসড়কে মিছিল থেকে ইটপাটকেল ছোড়া হলে পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশ ও মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে এবং আতঙ্কের কারণে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষের চলাচলও কমে গেছে। বিভিন্ন রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
সংঘর্ষ চলাকালে আরিফ (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
পঞ্চগড় পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাজেদুর রহমান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরিফ মারাত্মকভাবে আহত হন। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। রংপুরে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত আরিফ পঞ্চগড় পৌর এলাকার মসজিদ পাড়ার ফরমান আলীর ছেলে।
মুসল্লিদের দাবি, আহমদিয়া মুসলিম জামাত তথা কাদিয়ানীরা আমাদের শেষ নবীকে অস্বীকার করে অন্য কাউকে নবী মেনে নিজেকে মুসলিম দাবি করতে পারে না। গোলাম আহমদকে নবী মনে করে কাদিয়ানী সম্প্রদায়, তারা কাফের। ইসলামের নামে তাদের কোনো জালসা আয়োজন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মেনে নিতে পারে না। কাজেই তাদের জালসা বন্ধ ঘোষণা করতে হবে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব এবং বিজিবি তৎপর রয়েছে। কোনো প্রাণহানি যেন না ঘটে সেদিকেও সোচ্চার রয়েছে প্রশাসনের সর্বমহল।