ক্ষতি পোষাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা
তারিম আহমেদ, নওয়াপাড়া (যশোর)।
অভয়নগরে কৃষি অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধানের বীজ ভেজালের অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে হতাশার মধ্যে রয়েছেন উপজেলার কৃষকেরা।
ক্ষতি পোষাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। আর এ অভিযোগটি রোববার ৭ মে ভুক্তভোগী ১২জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের মধ্যপুর গ্রামের কৃষকদের মাঝে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধানের বীজ ও সার প্রদান করা হয়। উক্ত বীজ পুরাতন ও তিন ধরণের ভেজাল মিশ্রিত ধান। ওই ধানে কৃষকেরা চারা রোপনের পর যথাযথ পরির্চযা করেন। পরে উক্ত ধান থেকে ধানের মুকুল বের হওয়ার সময় প্রথম ধাপে ধান পেকে যায়। আবার দ্বিতীয় ধাপের ধান কিছু বের হয়েছেএবং ৩য় ধাপের ধান গভার্স্থায় পড়ে আছে। ধানের এই অবস্থা দেখে উপজেলার ভুক্তভোগী ওই কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
পরে কৃষি মাঠ কর্মকতার্র সাথে কথা বললে এ ব্যাপারে কোন স্বদউত্তর তারা পাননি। এরপর কৃষককেরা মোবাইল ফোনে আবার কৃষি কর্মকতার্র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধান কেটে ফেলার কথা বলেন।
ভুক্তভোগী ১২ জন কৃষক ধান না পেয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। যে কারণে তারা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের অফিসারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
কৃষক গোলাম সরোয়ার বলেন, ৮৪শতকে বীজ বোনার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ভালো ফলন হওয়ার কথা। কিন্তু এতো দিনেও তাঁর ক্ষেতে কোনো ফলন আসেনি। জমির ইজারা খরচ, শ্রমিকের মজুরি, খেত রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্তত ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ভেজাল বীজের কারণে এই টাকা তুলে আনার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।
মধ্যপুর গ্রামের কৃষক মো. সামছুর মল্লিক জানান, সরবরাহ করা বীজ থেকে চারা করে ক্ষেতে লাগানোর কিছুদিন পরেই মিশ্রণ দেখতে পান। এখন ধান গাছগুলো থেকে ছড়া বের হওয়ার সময়। কিন্তু জমিতে ছোটবড় নানা জাতের ধান গাছ দেখা যাচ্ছে। একই গ্রামের কৃষক জাহিদুল সরদার বলেন, ফলন বেশি হওয়ার আশায় মাঠের পর মাঠ কৃষি অফিস কৃর্তক প্রদত্ত ধান চাষ করেছি। ফলন ভাল হয়নি। ধার দেনা করে চাষ করে ক্ষতি হয়েছে ৩০ হাজার টাকা । ক্ষতি পোষাতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিস কর্তৃক ধান বীজ নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। ক্ষেতে লাগানো ধানগাছ কোনোটি ছোট, কোনোটি লম্বা আকার ধারণ করেছে। ওই সব গাছ থেকে আর মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ছড়া বের হওয়া শুরু হবে। এ অবস্থায় কৃষকের চোখে জল ছলছল করছে। কৃষকরা ওই ধানের বীজ নিয়ে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ফিল্ড সুপার ভাইজার সবাংকর মিত্র বলেন, আমি ৫টি গ্রামের ফিল্ড সুপার ভাইজার হিসাবে কাজ করি। মধ্যপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন কৃষককে অফিস কতর্ৃক প্রদত্ত ধানের বীজ দেওয়া হয়। তাদের ধানের ভাল ফলন হয়নি। তবে তার আশপাশের অ লের ধানের ফলন ভাল হয়েছে। কৃষকেরা তাকে চিনেন না এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার অনেক দায়িত্ব। গুটি কয়েকজন কৃষক হয়তবা অভিযোগ দিতে পারে। যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের ব্যাপারে ক্ষতি পুশিয়ে দেওয়া যায় কিনা? সে ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার পরির্দশণে আসছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপর আমি ওই অঞ্চলে আসছি। কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মেজবাহ উদ্দীন বলেন, কৃষকদের অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ও চেয়ারম্যান মহোদয় একসাথে মিলিত হয়ে উপজেলা কৃষি অফিসারকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, কৃষি অফিস কৃর্তৃক প্রদত্ত ধানের বীজ ভেজালের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ দায়ভার আমি ও নিবার্হী অফিসার নিবো না। এ দায়ভার নিতে হবে কৃষি অফিসকে।