1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
রহস্য ও ইতিহাস : কাবা চত্বর শীতল কেনো? - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ফকিরহাটে মোবাইল না পেয়ে কিশোরীর আত্মহত্যা গোয়ালন্দে নুরা পাগলার মরদেহ পুড়িয়ে ফেলা, সরকারের তীব্র নিন্দা সহায়-সম্বলহীন শুক্কুরী বেগমকে ঘর উপহার দিলেন তারেক রহমান দৌলতপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আল মামুন গ্রেফতার অভয়নগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে চরমপন্থীদলের সদস্যের মৃত্যু শরণখোলায় কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন ৬০০ বিঘার সাদা শাপলার সমারোহ, দর্শনার্থীদের ভিড় ইসরায়েলবিরোধী তদন্ত দাবিতে তিন ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংস্থার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অসুস্থতার ৪৭ দিন পর জনসম্মুখে জামায়াত আমির শফিকুর রহমান তিন বছরের শিশু হত্যার অভিযোগে চাচা-চাচি আটক

রহস্য ও ইতিহাস : কাবা চত্বর শীতল কেনো?

  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩
  • ২৪৪ জন খবরটি পড়েছেন

বিলাল হোসেন মাহিনী
হাজারো বরকতে ভরা হারামাইন (মক্কা-মদীনা) শরীফাইন। নবীর দেশ সৌদি আরবে গ্রীষ্মের সময়ে মক্কায় ৫০-৫৫ সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে। মরু বালুর দেশ সৌদি আরবের শুষ্ক তাপমাত্রা এবং প্রচন্ড গরমের মধ্যেও পবিত্র কাবা চত্বর শীতল থাকার কারণ হলো এর মেঝতে বসানো বিশেষ গুণসম্পন্ন পাথর। গ্রিস থেকে আনা এই পাথর ও বিশ্বসেরা আর্কিটেকচারদের বিশেষ পুরোকৌশল বিদ্যা কাবা চত্বরকে প্রচ- রৌদ্রের মাঝেও শীতল রাখে বলে জানান দেশটির পবিত্র দুই মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্সের অফিস। গ্রিসের থাসোস নামক পাহাড় থেকে এই পাথর আমদানি করা হয়েছে বলে এই পাথরের নাম ‘থাসোস পাথর’। এই পাথরের বিশেষ গুণ হচ্ছে, তা সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে তাপও শুষে নিতে পারে। এছাড়াও এই মার্বেল পাথরের নিচে রয়েছে কৃত্রিম পানির নালা। যা বালির মধ্যে দিয়ে পানি প্রবাহিত করে নিচে ভিজিয়ে রাখে। যার ফলে সৃষ্টি হয় শীতলতা বা বরকত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এই ঘর, যা বাক্কায় (মক্কা) অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।’ (সূরা আল ইমরান, ৯৬)

জানা যায়, ১৯৭৮ মোতাবেক ১৩৯৮ হিজরি সনে সৌদি বাদশাহ খালিদের নির্দেশে পবিত্র মসজিদুল হারামের মাতাফ (কাবা চত্বর) সম্প্রসারণকালে প্রথমবার এর মেঝেতে থাসোস মার্বেল লাগানো হয়। পবিত্র মসজিদে ব্যবহৃত মার্বেলের পুরুত্ব পাঁচ সেন্টিমিটার। এর বৈশিষ্ট্য হলো, তা রাতের বেলা ছিদ্রের মাধ্যমে মুহূর্তেই আর্দ্রতা শোষণ করে এবং দিনের বেলা রাতের শোষিত আর্দ্রতা বের করে। তা ছাড়া সূর্যের রশ্মিকে প্রতিফলিত করে দিনের বেলা মেঝের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে। ফলে তপ্ত রোদের মধ্যেও সব সময় মসজিদের মেঝে শীতল থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্লভ মার্বেলগুলোর একটি থাসোস মার্বেল। স্নো হোয়াইট মার্বেল নামেও পরিচিত। গ্রিসে স্ফটিক সাদা রঙের এই পাথরের বহুল ব্যবহার রয়েছে। অ্যামফিপোলিসের প্রাচীন মেসিডোনিয়ান সমাধি, ইস্তাম্বুলের আয়া সোফিয়াসহ ইতিহাসের সেরা স্থাপনাগুলোর দেয়াল ও মেঝে এই পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়। মহামূল্যবান এই পাথরের দাম প্রতি বর্গমিটার ২৫০ থেকে ৪০০ মার্কিন ডালার বা তারও বেশি। মার্বেলটি এজিয়ান সাগরের কাভালার নিকটস্থ পূর্ব গ্রিক দ্বীপ ‘থাসোস’ থেকে সংগ্রহ করা হয়।

কাবা চত্বরে পাথর স্থাপনের রহস্য ও ইতিহাস ঃ
মক্কা-মদিনা সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ভার দেওয়া হয়েছিল মিশরীয় স্থপতি ড. মোহাম্মাদ কামাল ইসমাইলের ওপর। তিনি চেয়েছিলেন, তাওয়াফকারীদের আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য মসজিদুল হারামের মেঝে এমন মার্বেল পাথর দিয়ে ঢেকে দিতে- যার বিশেষ তাপ শোষণ ক্ষমতা রয়েছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর এরকম মার্বেল পাথরের সন্ধান পাওয়া যায় গ্রিসের ছোট্ট একটি পাহাড়ে। আর কোথাও এ ধরনের মার্বেলের মজুদ পাওয়া যায়নি।

মিশরীয় স্থপতি ড. মোহাম্মাদ কামাল ইসমাইল

স্থপতি কামাল ইসমাইল গ্রিসে গিয়ে পর্যাপ্ত মার্বেল কেনার চুক্তি সই করে মক্কায় ফিরে আসেন। যথাসময়ে সাদা মার্বেলের মজুদও চলে আসে এবং সেগুলো দিয়েই বিশেষ নকশায় মসজিদুল হারামের মেঝের কাজ সম্পন্ন হয়। ওই ঘটনার ১৫ বছর পরে সৌদি সরকার কামাল ইসমাইলকে আবারো তলব করে এবং বলা হয়, মদিনার মসজিদে নববির চারপাশের চত্বরও একইভাবে সাদা মার্বেল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এমন অবস্থায় ড. মোহাম্মাদ কামাল ইসমাইল উক্ত পাথর পাওয়া যাবে কি-না এই সংশয় নিয়ে আবার গ্রিসে গেলেন।

গ্রিসের পাথর কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৫ বছর আগেই পাহাড়ের বাকি অংশটুকু বিক্রি হয়ে গেছে। এই কথা শুনে বিমর্ষ কামাল ইসমাইল হাতে থাকা কফি পর্যন্ত শেষ করতে পারেননি। পরের ফ্লাইটেই মক্কায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই কোম্পানির অফিস থেকে বেরিয়ে আসার আগে বাকি মার্বেল পাথর যিনি কিনেছিলেন, তার নাম-ঠিকানা জানতে চান। জবাবে জানানো হয়, ১৫ বছর আগের লেনদেন পাওয়া দুষ্কর। তবে পেলে জানাবে বলে কথা দেয়। পরদিন তাকে ফোন দিয়ে জানানো হলো, সেই ক্রেতার নাম-ঠিকানা খুঁজে পাওয়া গেছে! নিরাশ মনে আবারও সেই অফিসের দিকে যাত্রা করেন তিনি। ঠিকানা হাতে পেয়ে তার হার্টবিট বেড়ে যায়। কেননা কাগজের হিসেব অনুযায়ী ওই ক্রেতা একটি সৌদি কোম্পানি!

স্থপতি কামাল ইসমাইল সেদিনই সৌদি আরবে ফিরে যান। ক্রেতা কোম্পানির এমডির সাথে দেখা করে জানতে চাইলেন, ১৫ বছর আগে গ্রিস থেকে কেনা সেই মার্বেল পাথর দিয়ে তারা কী করেছেন। এমডি প্রথমে কিছুই মনে করতে পারলেন না। পরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেলো সেই সাদা মার্বেলের পুরোটাই স্টকে পড়ে আছে, কোথাও ব্যবহার করা হয়নি।

এই তথ্য পেয়ে কামাল ইসমাইল সেখানেই শিশুর মতো কাঁদতে শুরু করেন। এমডি তার কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি পুরো ঘটনা খুলে বলেন। পরে ড. কামাল ওই কোম্পানিকে সৌদি সরকারের পক্ষে একটি খালি (ব্ল্যাঙ্ক) চেক দিয়ে ইচ্ছেমতো অংক বসিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু কোম্পানির মালিক যখন জানলেন, এই সাদা মার্বেল পাথর মসজিদে নববির চত্বরে বসানোর জন্য ব্যবহৃত হবে, তখন তিনি ওই চেক নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, আল্লাহই আমাকে দিয়ে এটা কিনিয়েছিলেন, আবার তিনিই আমাকে এর কথা ভুলিয়ে দিয়েছেন। এই মার্বেল পাথর রাসুল (সা.) এর মসজিদের উদ্দেশ্যেই এসেছে! তারপর সেই পাথর দিয়ে মসজিদে নববির চত্বরও মুড়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, স্থপতি ড. মোহাম্মাদ কামাল ইসমাইল (১৯০৮-২০০৮) আর্কিটেকচারের ওপর তিনটি ডক্টরেট ডিগ্রিপ্রাপ্ত প্রথম মিশরীয় প্রকৌশলী। শতবর্ষী এই স্থপতি তার কর্মজীবনের প্রায় পুরোটা সময় মক্কা ও মদীনার দুই মসজিদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু এর জন্য কোনো ধরনের পারিশ্রমিক তিনি গ্রহণ করেননি। তার প্রশ্ন ছিল, এই দু’টি পবিত্র মসজিদের কাজের জন্য পারিশ্রমিক নিলে শেষ বিচারের দিনে আমি কোন মুখে আল্লাহর সামনে গিয়ে দাঁড়াবো?

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews