1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
ভয়াবহ সিডরের ১৬ বছরেও মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে স্থাপিত হয়নি ব্লক - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শফিকুল আলমের শাস্তি দাবি: মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সরব প্রতিবাদ গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু, হামাসের প্রস্তুতি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণায় শ্যামনগরে আনন্দ মিছিল কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা সাজু গ্রেফতার জেপিসি কমিটির বিরুদ্ধে মুসলিমসহ ভিন্নমত দমনের অভিযোগ মহাকুম্ভে পুণ্যার্থীদের জন্য মসজিদ-মাদ্রাসা ও ইমামবাড়ীর দরজা খুলে দিলেন মুসলিমরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লড়াইয়ে রণক্ষেত্র ফুসরা গ্রাম, আহত ৮ ফাঙ্গিও-মসের চালানো মার্সিডিজ স্ট্রিমলাইনার বিক্রি হলো ৬৫০ কোটি টাকায় দাবি না মানলে রেললাইন ছাড়ব না, শিক্ষার্থীদের হুঁশিয়ারি শেখ হাসিনাকে এক শ কোটি টাকা ঘুষ দেয়া, সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর তথ্য

ভয়াবহ সিডরের ১৬ বছরেও মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীতে স্থাপিত হয়নি ব্লক

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩
  • ১১২ জন খবরটি পড়েছেন

বাস্তবায়িত হয়নি মন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি

ইলিয়াস হোসাইন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াল এক রাত ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর। এই রাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল স্মরণকালের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় সিডর। সিডরে আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল উপকূলীয় অঞ্চল। প্রাণহানী, ক্ষয়-ক্ষতির ভয়ানক স্মৃতিচারণে আতকে ওঠে এখনো এখানকার মানুষ। বিপর্যয় ঠেকাতে জাতীয়ভাবেও হিমশিম খেতে হয়েছিল।

জাতিসংঘ পর্যন্ত গড়িয়েছিল সিডর কাহিনী। লাশ আর লাশ। স্বজনহারা মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছিল আকাশ-বাতাস। সিডরের তান্ডবে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছিল দক্ষিণাঞ্চলের ৩০ জেলার দুই শতাধিক উপজেলা। বিধ্বস্ত হয় ৬ লাখ মানুষের বসতবাড়ি, ফসলের ক্ষেত। ভয়াবহ বিপর্যেয় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়ক, নৌ, বিদ্যুৎ এবং টেলিযোগাযোগসহ আধুনিক সভ্যতার সার্বিক অবকাঠামো।

সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে প্রকৃতির এ ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখে শিউরে ওঠে গোটা বিশ্ব। সাহায্যের হাত বাড়ায় দেশি-বিদেশিরা। সময়ের আবর্তনে বছর ঘুরে ঘুরে এসেছে সেই দিন। স্মৃতিচারণে চাপা কান্না আর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর বহু জায়গায় আয়োজন করা হয় দোয়া ও মোনাজাতের।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে সিডরের আঘাতে ১০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং ১১৫ জন নারী, পুরুষ ও শিশুর প্রাণহানিসহ অনেক সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল। আংশিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় ১৪ হাজার ৫০০ ঘর, গবাদিপশু মারা যায় ২ হাজার ৫০০, হাঁস-মুরগি মারা যায় ১ লাখ ৩০ হাজার, ফসল বিনষ্ট হয় ১১ হাজার ৯৯০ একর জমির, ৭ হাজার ৯৮৭টি পুকুরের প্রায় কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। এছাড়াও উপজেলার ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ২৪০টি মসজিদ সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়, ৩৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ১৫৬ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ৩৫ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে বিধ্বস্ত হয় ১ হাজার ১৭০টি ঘর এবং মৃত্যু ঘটে ৮৫ জনের। এর মধ্যে চরখালী গ্রামে মারা যায় ৪৫ জন। মেন্দিয়াবাদ গ্রামে মারা যায় ২৫ জনেরও বেশি। উপজেলার কপালভেরা গ্রামের পালোয়ান বাড়িতে একই ঘরে স্বামী-স্ত্রীসহ মারা যান ছয়জন। সিডরে মারা যাওয়া লাশগুলো চরখালী খান বাড়ির পুকুর পাড়ে ২৪টি কবরে ৩৩টি লাশ দাফন করা হয়।

চরখালী সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন কাঞ্চন মল্লিক । মেন্দিয়াবাদ গ্রামের নদীর তীরে তাঁর ঘর। নদী আর ঘরের দূরত্ব পনেরো গজেরও কম। ঘরের সামনের ওয়াপদা রাস্তার অর্ধেক দাঁড়িয়ে আছে। পটুয়াখালীর একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভেকু দিয়ে নদী থেকে মাটি তুলে ওয়াপদা রাস্তা সংস্কার করে দিচ্ছে, এমন চিত্র দেখা গেলো সরেজমিনে গিয়ে। যেখানে নদীর ভাঙন রোধে পাইলিংয়ের (ব্লক) দাবি এলাকার মানুষের, সেখানে উল্টোভাবে নদীর পার কাটা হচ্ছে।

এখানকার সর্বস্তরের মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের মনে আশার সঞ্চার সৃষ্টি হয়েছিল পায়রা নদীর তীরে বৃহৎ বেরীবাধ হবে এবং ভাঙন ঠ্যাকানোর জন্য নদীতে পাইলিং তৈরি করা হবে এমন তথ্য প্রাপ্তিতে ২০১৮ সালে তৎকালীন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ভাঙন কবলিত রানীপুর, হাজীখালী,মেন্দিয়াবাদ, চরখালী ও গোলখালীর পায়রা নদীর পাড় পরিদর্শন করে ব্লক স্থাপনের ঘোষণা দেন। সেই থেকে নদী পাড়ের বাসিন্দারা মুখিয়ে থাকেন কবে হবে মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। তথ্য যেন মুখে রয়ে গেছে,বাস্তবায়নে নয়।

সর্বশেষ, পাউবো সূত্রে চলতি বছরে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হচ্ছেনা। কাজটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। ঝড়,জলোচ্ছাস,তুফান,বন্যা সহ নানা প্রতিকূলতায় নাকানি চুবানি খাওয়া পায়রা পাড়ের ভিটে মাটি আঁকড়ে থাকা মানুষগুলো নিরাশ হয়ে পড়েন এই দুঃসংবাদ শুনে।

এ বিষয় পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড ঢাকার সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ শাহআলম জানিয়েছিলেন, স্থানীয় লোকজনের অসহযোগিতার কারণে বিশ্ব ব্যাংক প্রতিনিধিগণ সন্তুষ্ট হতে পারেননি। যে কারণে পাইলিংয়ের (ব্লক) কাজটি অন্য স্থানে চলে গেছে। তবে প্রজেক্ট এখনো চলমান। সঠিক তদারকি করলে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইয়েমা হাসান বলেন, স্থানীয় ভাবে গণ কবর সংরক্ষনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এবং পাইলিংয়ের (ব্লক) বিষয়টি তিনি তদারকি করবেন এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর সুপারিশ করব।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews