বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির ফলে কয়েকটি বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তবে এ অবস্থার মধ্যেও দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে যাত্রী পারাপারসহ সব কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। ভারতীয় রাজনৈতিক নেতাদের আমদানি-রপ্তানি বন্ধের হুমকিতেও এই বন্দরে কোনো কাজ হয়নি।
বন্দর ও ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, গত তিনদিনে (রবি, সোম ও মঙ্গলবার) বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে এক হাজার ৬৪৮টি ট্রাকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে। একই সময়ে ১১ হাজার ৭৮০ জন দেশি-বিদেশী পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার হয়েছেন। এরমধ্যে ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার হয়েছেন ৫ হাজার ৩৬৩ জন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ভারতে পারাপার হয়েছেন দুই হাজার ৪১২ জন। সোমবার তিন হাজার ৯২৪ জন ও রোববার ৫ হাজার ৪৪৪ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার হয়েছেন।
এছাড়া গত তিনদিনে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে দুই হাজার ৫১৪ জন ভারতীয় নাগরিক। আর বাংলাদেশ থেকে ফেরত গেছেন দুই হাজার ৮৪৯ জন ভারতীয়। সবশেষ বুধবার সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে ৩৮০ ট্রাক পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। আর যাত্রী পারাপার হয় এক হাজার ৫২০ জন।
এছাড়া মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ৫৯৭ ট্রাকে আমদানি-রপ্তানি হয়েছে। সোমবার ৪৪৪ ট্রাক ও রোববার ৬০৭ ট্রাক পণ্য আনা-নেওয়া করে।
ওপারের পরিস্থিতি জানতে চাইলে ভারত ফেরত ঢাকার পাসপোর্টধারী যাত্রী আবুল কাশেম বলেন, মার্কুইজ স্ট্রিটের একটি আবাসিক হোটেলে আমরা ছিলাম। কোনো ঝামেলা হয়নি। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, অনেক বাংলাদেশি যারা ভারতে আছেন, তারা চেকপোস্ট বন্ধের মতো গুজবের খবর শুনে দেশে ফিরছেন।
বেনাপোল বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাকচালক গণেশ রায় বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় আমরা ট্রাক নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসছি। আগের থেকে বর্ডারে একটু কড়া। তবে মালামাল রপ্তানিতে আমাদের কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি কেউ। বেনাপোল বন্দরে বাংলাদেশি লোকজন আমাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেছেন।
বাংলাদেশি পণ্য পেট্রাপোল বন্দরে খালি করে ফেরত আসা ট্রাকচালক জাহিদ হাসান বলেন, তিনি স্বাভাবিক সময়ের মতো পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য খালি করে ফিরে এসেছেন। সেখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা একটু জোরদার করা হয়েছে। ওপারের লোকজন আমাদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেনি।
বেনাপোল শুল্ক ভবনের চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল গনি বলেন, বুধবার সকাল থেকেই বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক। বুধবার সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে ৩৮০টি ট্রাকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে। গত তিনদিনে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে এক হাজার ৬৪৮টি ট্রাক পণ্য নিয়ে দুই দেশের বন্দরে প্রবেশ করে।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, দুই দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক আছে। ভারতে যাওয়া যাত্রীর চাপ একটু কম। ভিসা বন্ধ থাকায় ভারতগামী যাত্রীর চাপ কমছে। গত তিনদিনে ১১ হাজার ৭৮০ জন দেশি-বিদেশি পাসপোর্টযাত্রী পারাপার হয়েছেন। এরমধ্যে ভারতীয় পাসপোর্টযাত্রী পারাপার হয়েছেন ৫ হাজার ৩৬৩ জন। যাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে দুই পারে কোনো সমস্যা হয়নি কারো। জাগো নিউজ