এবার নিজ দেশেই প্রতিরোধের মুখে ভারতের মিডিয়া ও কিছু রাজনৈতিক নেতার বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি মিডিয়ার অপপ্রচার ও বিজেপি নেতার লাগামহীন বক্তব্য রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন ভারতীয়রাই।
এদিকে, ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের চট্টগ্রামে আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে আইনজীবী হত্যার প্রধান আসামী চন্দনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম আদালতের পাশে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে ২৬ নভেম্বর হত্যা করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে তার অনুসারীদের সংঘর্ষের জেরে হামলার শিকার হন আইনজীবী আলিফ।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও স্থানীয়দের ধারণ করা ভিডিও বিশ্লেষণে দুজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী- কমলা টিশার্ট ও সিলভার হেলমেট পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো যুবকের নাম চন্দন। আর নীল রঙের টিশার্ট ও লাল হেলমেট পরে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া যুবক বুনজা মেথর।
ঐ দুজনসহ মামলায় আসামি ৩১ জন। বুধবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হয় হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি চন্দনকে। আইনজীবী আলিফ হত্যায় অংশ নেয়া বেশিরভাগ আসামি পাশের সেবক কলোনি বা সুইপার কলোনির বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার।
অন্যদিকে, আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড পরবর্তী পরিস্থিতিতে ইসকনের মন্দিরগুলোতে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের কিছু মিডিয়ায় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ তুলে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তোলে।
পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জায়গায় বিক্ষোভ হয়। উগ্রবাদীদের হামলা-ভাংচুরের শিকার হয় আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশন। এ অবস্থায় নিজ দেশেই প্রতিবাদের মুখে পড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রতিবাদ করেন তৃণমূল কগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
বাংলাদেশিদের চিকিৎসা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে কলকাতার চিকিৎসকদেরও তোপের মুখে পড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এসব নিয়ে ভারতের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও সংশয় দেখা দিয়েছে। অনেকেরই আত্মীয় স্বজন বাংলাদেশে আছে, তাদের সাথে কথা বলে সঠিক তথ্য জানার ফলে তারাও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন মিডিয়ার সামনে।
এদিকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভুয়া খবর, ও ভিন্ন ঘটনাকে হিন্দু নির্যাতন হিসেবে দেখানো, আগস্টেই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে এমন ভিডিও এখনো প্রচার করছে ভারতের কিছু মিডিয়া। আর সেগুলো ফেসবুকে পোস্ট ও শেয়ার করছেন বাংলাদেশের অনেকে। সেই ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অপপ্রচার চালানো বেশিরভাগই বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগের সমর্থক। অনেকেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ভাতৃপ্রতিম সংগঠনে পদধারী নেতাও। সূত্র : বাংলাভিশন / আমাদের সময়ডটকম