সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জে ১৫ শত কুইন্টাল মধু ও চার শত কুইন্টাল মোমের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মধু আহরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (০৭ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের আয়োজনে ৭১নং বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে সুন্দরবনের মধু আহরণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও ) এ জেড এম হাছানুর রহমানের সভাপতিত্বে মধু আহরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির মোল্লা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মশিউর রহমান।
এসময় উপজেলা প্রশাসন, বনবিভাগ, নৌ পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি, সমাজকর্মী, সংবাদকর্মী, এনজিও কর্মী সহ মৌয়ালরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হাছানুর রহমান বলেন, ২২-২৩ অর্থ বছরে সুন্দরবন থেকে মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করেছেন ১০২৩ কুইন্টাল এবং মোম সংগ্রহ করেন ৩০৬.৯০ কুইন্টাল। ২৯০টি পাশের মাধ্যমে ২০৪৬জন মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করে উক্ত মধু ও মোম সংগ্রহ করেন। পরবর্তী ২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩৬৪টি পাশের মাধ্যমে ২৪৭০জন মৌয়াল সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে যায়। তাদের সংগৃহীত মধু ১২৩৫ কুইন্টাল এবং মোম ৩৭০ দশমিক ৫০ কুইন্টাল। ২০২৫ সালে ১৫শত কুইন্টাল মধু ৪শত কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত ৩৭ টা মধুর পাশ হয়েছে।
মৌয়ালদের মধ্যে আবু মুসা বলেন, মৌচাক থেকে যদি সময় মত মধু আহরণ না করা যায় তাহলে সেই অঞ্চলে মধু হয় না। অভয়ারণ্য এলাকা যদি খুলে দেওয়া হয়। তাহলে সুন্দরবনে মধুর অভাব হবে না। অভয়ারণ্যে সময় মত মধু কাটা হয় না বলে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের মধু কমে যাচ্ছে। আমাদের দাবি মধুর সময় অভয়ারণ্য এলাকাকে মুক্ত করে দেওয়া।
সোনার বাংলা ম্যানগ্রোভ ইকো ট্যুরিজম এর সত্ত্বাধিকারী নাজমুল শাহাদাত পলাশ বলেন, সুন্দরবনের মধু ব্যবসায়ীদের বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিবন্ধন দিতে হবে। তারা যেন বুঝাইতে পারে এটা সুন্দরবনের মধু আমরা ছাড়া অন্য কেউ বিক্রি করতে পারবেনা। তা না হলে অনলাইনে যেভাবে মধু বিক্রি শুরু হয়েছে অধিকাংশ ক্রেতারা সুন্দরবনের মধুর উপরে ভিন্ন ধারণা তৈরি হচ্ছে। সুন্দরবনের মধু যেন জিআই স্বীকৃতি পায় সেজন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনী খাতুন বলেন, সুন্দরবনের খলিসা ফুলের মধুকে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। আশা করি আগামী দুই এক বছরের মধ্যে এই সফলতা আপনারা দেখতে পারবেন।