1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
ন্যায্য মজুরী এবং শ্রমঘন্টা নিয়ে উপকূলীয় মানুষের অবস্থান কর্মসূচী - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
চাঁদা না দেওয়ায় হামলা, কোটি টাকার মাছ লুট: ‘প্যান্ডামিক ফিশারিজ’ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ এই সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মৌলবাদ- প্রেসক্লাবে হিন্দু মহাজোটের কড়া বার্তা কুড়িগ্রাম-এ সাপের ছোবলে সাপুড়ের মৃত্যু বেসরকারি শিক্ষকদের বেতনে বার্ষিক ‘বিশেষ সুবিধা’ ঘোষণা যশোরের অভয়নগরে বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা ৫ ঘণ্টার সহিংসতা, ১৩টি মামলা: গোপালগঞ্জে উত্তপ্ত রাজনীতি ১০টির বেশি সিম বাতিল করতে হবে অক্টোবরের মধ্যে: বিটিআরসি আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নেবেন, দাবি মিন্টুর ব্যারিস্টার কায়সার কামালের সহযোগিতায় চোখে দেখতে না পারার কষ্ট দূর হবে তাদের ৩৯ আসনের সীমানা পরিবর্তন: গাজীপুরে আসন বাড়ছে, বাগেরহাটে কমছে

ন্যায্য মজুরী এবং শ্রমঘন্টা নিয়ে উপকূলীয় মানুষের অবস্থান কর্মসূচী

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
  • ১১০ জন খবরটি পড়েছেন
অনাথ মন্ডল,নিজস্ব প্রতিনিধি।

১লা মে আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিন। পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রমজীবী মানুষ ন্যায্য মজুরি, অবকাশ, মানবিক আচরণ, স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ কর্মপরিবেশের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। অনেক দেশেই শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টার কর্মদিবসের দাবি পূরণ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের উপকূলের শ্রমিকরা রয়েছেন আজও পিছিয়ে।

কাজ করেও নায্য মজুরি পান না উপকূলের শ্রমিকরা। নারী-পুরুষ একইসঙ্গে একই কাজ করে নারীরা ভুগছেন মজুরি বৈষম্যে। তারা তাদের অধিকার ও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের এসব দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোলিনী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন আশ্রয়ন প্রকল্প প্রাঙ্গণে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, সবুজ সংহতি, যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিম এর আয়োজনে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের অংশগ্রহনে এবং বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এর সহযোগিতায় ন্যায্য মজুরী এবং শ্রমঘন্টা নিয়ে উপকূলীয় খেটে খাওয়া মানুষের অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় কৃষাণী কৌশল্যা মুন্ডা।

উপকূলীয় এলাকায় দিনমজুরের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণ এই এলাকার অধিকাংশ পুরুষ শ্রমিকরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইট ভাটাসহ গ্রাম ছেড়ে শহরে কাজে চলে যান। এজন্য শ্রমিক সংকট কাটাতে এবং স্বল্প মূল্যে শ্রমিক পেতে হতদরিদ্র শ্রমিকদের বেছে নেন কৃষকসহ এই এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন কাঁকড়া হ্যাচারি বা মৎস্য প্রকল্পের ব্যবসায়ীরা। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলীয় এলাকায় পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা কাঁকড়ার খামার, মাছের ঘের, বিলে ধান কাটা, রাজমিস্ত্রির সহকারী, মাটিকাটা, গ্রামীণ রাস্তানির্মাণ ও সংস্কার, কৃষিকাজ করে থাকেন। তবে এ অঞ্চলের কাঁকড়ার খামারে আন্তর্জাতিক শ্রম আইন লঙ্ঘন করে ৮ ঘন্টার বাইরে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করিয়ে নেয়।

নারী শ্রমিক কল্যাণী মুন্ডা বলেন, “আমরা সমাজে পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। এমনিই সমাজের মানুষ আমাগো গোনে না। সকল ক্ষেত্রে আমাদের ঝাড়ি শুনতি হয়। আর কাজ কুরে টাকা কম দিলেও আমাদের কিচ্ছু বলার নি। পেটের জ্বালায় সব সহ্য করতি হয়।”

বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের নারী শ্রমিক মাধবী রানী বলেন, একই সময়ে পুরুষের সাথে একই কাজ করে অর্ধেক মজুরি পাই। যখন মজুরি নিই তখন অনেক খারাপ লাগে। কৃষিজমিতে দিনমজুরের কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে রান্না করতে হয়। স্কুল থেকে ফেরা সন্তান ও কাজ থেকে ফেরা দিনমজুর স্বামীকে দুপুরের খাবার দিয়ে গৃহস্থালির কাজ গোছাতে গোছাতে বিকেল। এরপর খাবার পানি এনে বাড়িতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। রাতটুকু বিশ্রামের পর সকাল হতেই আবার কাজের জন্য বেরিয়ে পড়তে হয়। হাড়ভাঙা এমন পরিশ্রমের পরও পরিবারে যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়ার অভিযোগ তার।

শুধু কল্যাণী মুন্ডা ও মাধবী রানী আর মায়া রানী নয়, বরং উপকূলীয় এ জনপদের নারীদের প্রায় সবারই দাবী, তারা অনেক বেশি অবহেলা এবং বঞ্চনার শিকার। মজুরি বৈষম্যের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ তাদের।

কর্মক্ষেত্র আর মজুরির পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তাসহ পারিবারিকভাবেও এ জনপদের নারী বৈষম্যের শিকার বলে জানান অনেকে। বুড়িগোয়ালিনী সবুজ সংহতি’র সদস্য দিলীপ মাঝি বলেন, এই অঞ্চলে অধিকাংশ নারী ও পুরুষরা কাঁকডা খামারে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। কিছু নারী মাছের ঘেরে ও কৃষিকাজের সাথে জড়িত। তাদের বাড়ির কাজ করতে হয়, পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে সমান বা তার চেয়ে বেশি কাজ করতে হয়। এরপরও পুরুষ যে মজুরি পায়, নারী পায় তার অর্ধেক। এই এলাকার অধিকাংশ নারী তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নয়। কর্মপরিবেশ, কর্মঘণ্টা বিষয়ে অধিকাংশই জানেন না। অনেকে জানলেও কাজ হারানোর ভয়ে এ বিষয়ে মুখ খুলতে চান না। সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা সম অধিকারের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। নারীদের অধিকার এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি দাবি করে তিনি আরও বলেন, নারী-পুরুষদের মজুরি বৈষম্য থাকলে নারীরা কাজে অনুৎসাহী হবেন এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে যাবে। তাই মজুরি বৈষম্য নিরসনে স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনকে যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে।

উন্নয়ন কর্মী চম্পা মল্লিক বলেন, পুরুষ শ্রমিকদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছেন এটা ভালো লক্ষণ। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হলে নারী-পুরুষ সমানতালে এগোতে হবে। তবে কোনোভাবেই মজুরি বৈষম্য করা যাবে না। এতে নারী শ্রমিকরা কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। তবে আগের তুলনায় নারী শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্য অনেকটা কমে আসছে বলে দাবি করেন তিনি।

অবস্থান কর্মসূচীতে আরও উপস্থিত ছিলেন, বারসিক এর এরিয়া অফিসার বাবলু জোয়ারদার, কর্মসূচী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মন্ডল, সহযোগী কর্মসূচী কর্মকর্তা মনিকা পাইক, বরষা রাণী, প্রতিমা চক্রবর্তী, এসএসএসটি’র মাসুম বিল্লাহ, ওবায়দুল্লাহ আল মামুন, সবুজ বিল্লাহ, যুব সংগঠক স.ম ওসমান গনী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, অবস্থান কর্মসূচী শেষে উপস্থিত নারী-পুরুষ সকলের সমন্বয়ে একটি সচেতনতামূলক “ঘামের দাম কোথায়.?” শীর্ষক একটি পথনাটক প্রদর্শণ করা হয়।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews