1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে জামায়াত কেন নয়? - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে জামায়াত কেন নয়?

  • সর্বশেষ আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
  • ৪৮ জন খবরটি পড়েছেন

মোঃ মাসুম বিল্লাহ।। আওয়ামী লীগ ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী জুলাই বিপ্লবে সময়ে মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হয়ে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে। আর সাথে সাথে প্রশ্ন উঠেছে আওয়ামী লীগ অপরাধী হলে জামায়াত কেন নয়? যদিও উপদেষ্টা পরিষদ এবং কিছু রাজনৈতিক মহল থেকে জামায়াতের বিরুদ্ধে এ রকম অপরাধের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া অথবা এই অপরাধের দায় নিয়ে তাদের রাজনৈতিক বক্তব্যে স্পষ্ট করার নানা কথা বা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করা প্রধান শক্তি আওয়ামী লীগ এত দিন জামায়াতকে সেই যুদ্ধ অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত শক্তি বলে ন্যারেটিভ দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করেছিল। সেই একই ধারায় বর্তমান সময়ের এনসিপি, বিএনপি তারাও ফায়দা আদায় করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটা সত্য ১৯৭১ সালে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড এদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল। এই বিপক্ষে থাকাটা ৫৪ বছর পরে এসে কতটুকু দায়ভারের জায়গা জন্ম দেয়? সেটা হচ্ছে আমাদের বিতর্কের জায়গা।

দীর্ঘ ৫৪ বছর পরে এসে স্বাধীনতাকে স্বচক্ষে দেখার ও তাতে অংশগ্রহণ করা লোকের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। আমরা যারা রয়েছি শুনে শুনে মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেছি, বিশ্বাস করেছি। কিন্তু বাস্তবিক প্রেক্ষাপটে আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির অপশাসন দেখেছি তখন হতাশ হয়ে পড়েছি। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে দেশের কল্যাণের জন্য ব্যবহার করার পরিবর্তে যখন ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে দেখেছি তখন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা না করলেও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ভীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছি। আর এই ৫৪ বছর পরে এসে নতুন প্রজন্ম দেখেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ এবং বিপক্ষে শক্তির কর্মকান্ড। এ কর্মকাণ্ড দেখে তাদের মনে একটা দ্বিধা দ্বন্দ্বের জন্ম হয়েছে। আর এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব নতুন বাংলাদেশে গড়ার ভাবনার জন্ম দিয়েছে। সেই নতুন বাংলাদেশে তারা চেয়েছে ন্যায়বিচার, সেখানে
থাকবেনা কোন অনাচার, বৈষম্য, প্রতিশোধ পরায়নতা ও হিংসাত্মক মনোভাব। এটাই স্বাভাবিক যে, তারা না দেখা ৭১ থেকে দেখা সত্যকে বড় করে দেখবে। কেননা তাদের চোখের সামনে সংগঠিত ঘটনা তাদের মনের উপরে বড় প্রভাব বিস্তার করে। এই প্রভাব বিস্তার তাদেরকে একটু একটু করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে এবং তাদের বিপক্ষ শক্তির পক্ষে সহানুভূতি যুগিয়েছে। আরো সমস্যা হলো যারা নতুন প্রজন্ম তারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। কিন্তু তারা আদর্শগত রাজনীতির দিক থেকে এই বিপক্ষের শক্তির উপর প্রভাব বিস্তার, দমন, পীড়ন দেখে মর্মাহত হয়েছে।

ফলে আদর্শগত রাজনীতির দ্বন্দ্বে মজলুমকে ধারণ করেছে। আবার মুক্তির পন্থা হিসাবে তাদের আদর্শ অনুসরণ করে সেই অনুযায়ী চলতে অভ্যস্ত হয়েছে। তাদের আদর্শের জায়গা তুলনামূলক সঠিক মনে করেছে। তারা মনে করেছে যারা এর সাথে জড়িত ছিল; তাদের পূর্ব প্রজন্ম তাদের সাথে এদের কোন সংযোগ নাই। এই নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশকে ধারণ করে, বাংলাদেশকে গ্রহণ করে তারা তাদের আদর্শের জায়গা থেকে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। পুরানো ইতিহাস কে ভুলে তারা নতুন করে বাংলাদেশটাকে সাজাতে চায়।
নতুন করে সমস্যার জন্ম দিল ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এনসিপি, বিএনপি সহ কিছু বিরোধী দল। তারা যখন সেই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলে, তখনই জনমনে প্রশ্ন ওঠে যে, মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য আওয়ামী লীগের শাস্তি হলে জামায়াতের কেন নয়?

এ প্রশ্নটি যতটানা আদর্শীক তার থেকে বেশি রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের। ৭১ পরবর্তী ৫ আগস্ট যদি সত্য বলতে হয় তাহলে এই অপরাধের বিচার করাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কেননা ৫ আগস্টে যারা একত্রিত হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে সেখানে ওই ৭১ এর বিরোধী শক্তিও ছিল। তাহলে প্রশ্ন ওঠে ৭১ শক্তিকে বিতাড়িত করতে ৭১ বিরোধী
শক্তিকে নিয়ে কেন সংগ্রাম করল ছাত্র জনতা? কেন তবে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি হয়ে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে জামায়তকে নিয়ে সরকার গঠন করল? কেন বিএনপি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে নিয়ে ২০০১ সালে জোট গঠন করল এবং সরকার গঠন করল?

সর্বশেষ ২০২৪ সালে এসে বর্তমান এনসিপি কেন এই ৭১ বিরোধী শক্তিকে নিয়ে আন্দোলন করল? কেন তারা বলল না যে জায়ামাত এই আন্দোলনের অংশ হতে পারবে না? কেন বললো না জামায়াত বাংলাদেশকে ওন করে না? কেন বললো না আগে ক্ষমা চেয়ে আন্দোলনে আসতে? কেন তখন তাদেরকে বাদ দিয়ে তারা নিজেরা আন্দোলনকে চালিয়ে গেল না? তবে কি নিজের সুবিধা আদায়ের জন্য তখন প্রয়োজন ছিল বলে কিছু বলেনি? আর এখন প্রয়োজন শেষ হতে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে?

অবশ্যই জামায়াতের বিচার হোক। কিন্তু তার আগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে জোট করার জন্য বিচার করে নিষিদ্ধ করতে হবে। ২০০১ সালে বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে নিয়ে জোট করে সরকার গঠন করছে এজন্য আগে বিএনপিকে বিচার করে নিষিদ্ধ করতে হবে। তারপরে ২০২৪ সালে ছাত্রজনতা জামায়াত ইসলাম ও তাদের অঙ্গ সংগঠনকে নিয়ে আন্দোলন করে স্বাধীনতা স্বপক্ষের শক্তিকে বিতাড়িত করেছে, এ
জন্য ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের যে বিপ্লবী ছাত্র জনতা তাদের বিচার করে তাদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে। জুলাইয়ে যে সরকার গঠিত হয়েছে সেই সরকার স্বাধীনতা বিরোধীদের আন্দোলনের ফসল হলে এই সরকারকে নিষিদ্ধ করতে হবে। সেনাপ্রধান কেন ৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীদের ডেকে আলোচনায় বসালো এ জন্য তাকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যদি নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করা সম্ভব হয় তবে ২০২৫ সালে এসে জামায়াতকে বিচার করে
নিষিদ্ধ করা সঙ্গত হবে। ২০২৫ আর ১৯৭১ সালের ভিতরে দীর্ঘ একটা সময়ের ব্যবধান। এ ব্যবধান আমাদের ইতিহাসগত সত্য থেকে বরং বোধগত ব্যবধান ও বর্তমান পরিস্থিতিকে বড় করে তুলেছে। তাছাড়া এ দলের শীর্ষ নেতা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। এখন যদি এই দলটাকে শাস্তির আওতায় আনার পরেও তাদের অপরাধ মুক্তি নাহয়, তাহলে এই দলের নেতা কর্মী যারা রয়েছে তাদেরকে হয় হত্যা করুন অথবা পাকিস্তানের পাঠিয়ে দেন।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews