ডেস্ক নিউজ।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। শনিবারের (৩১ মে) এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি ত্রাণকেন্দ্রে এই হামলা চালানো হয়। জাতিসংঘের তথ্য মতে, গাজা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে খাদ্য-অনিরাপদ অঞ্চল এবং পুরো জনসংখ্যাই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
গত কয়েকদিনে ইসরায়েলি অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৬০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করতে পেরেছে। অপরদিকে, জর্ডানে ২ লাখ মানুষের এক মাসের খাদ্য মজুদ থাকলেও নিরাপত্তা সমস্যার কারণে তা গাজায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
সম্প্রতি নতুন এক ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, যেখানে জাতিসংঘ নয়, বরং একটি মার্কিন বেসরকারি সংস্থা ইসরায়েলি সামরিক সহায়তায় ত্রাণ সরবরাহ করছে। এতে করে বিতরণ প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে এবং ক্ষুব্ধ মানুষজন খাবার ও ওষুধের জন্য ত্রাণকেন্দ্রে হানা দিচ্ছেন।
হামাস এই ব্যবস্থাকে ‘অমানবিক প্রতারণা’ হিসেবে অভিহিত করে অভিযোগ করেছে যে, ইসরায়েল খাদ্য ও ওষুধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ এবং নিরাপদভাবে ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এই ঘটনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ হামাসকে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দেন। জবাবে হামাস ধাপে ধাপে বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দেয়, যেখানে ১০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি ও ১৮টি মরদেহের বিনিময়ে যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং ত্রাণ সরবরাহের নিশ্চয়তা দাবি করা হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। উইটকফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “এই প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়, এটি কেবলমাত্র সময় ক্ষেপণের চেষ্টা।”
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার একটি যৌথ প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২ মার্চ থেকে ত্রাণ প্রবেশে বাধা এবং ইসরায়েলি হামলা বেড়ে যাওয়ার পর গাজায় দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির হার মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি।