রাকিবুল হাসান, কুড়িগ্রাম: কন্যাসন্তানের জন্মের পর শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টির বদলে ইট ও মাটির গুঁড়ো পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে এক জামাইয়ের বিরুদ্ধে। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বড় ধনতোলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটলে রোববার (১৫ জুন) এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের আফতার আলীর মেয়ে আছমা খাতুনের সঙ্গে এক বছর আগে বিয়ে হয় বড় ধনতোলার সাহেব আলী ওরফে সব্দুল হকের ছেলে মোকছেদুল ইসলামের। সম্প্রতি আছমা কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
১১ জুন (বুধবার) সকালে মোকছেদুল ইসলাম শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তার শাশুড়ির হাতে একটি মিষ্টির কার্টন তুলে দেন। কিন্তু সেটি খুলে দেখা যায়, কার্টনের ভেতরে মিষ্টির বদলে রয়েছে মাটি ও ইটের গুঁড়ো। এতে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে আছমার পরিবার।
আছমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, “বিয়ের পর থেকেই স্বামী বিভিন্ন সময় আমাকে নির্যাতন করতেন, টাকার জন্য চাপ দিতেন। গর্ভধারণের পর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তিনি বারবার বলতেন, ছেলে হলে সুখ পাব, মেয়ে হলে দুঃখ। এখন মেয়ে হয়েছে বলে এভাবে অপমান করলেন।”
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোকছেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমি এক কেজি মিষ্টি ও মেয়ের জন্য কিছু কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম। তারা যা বলছে, সব মিথ্যা। আমাকে হেয় করতে পরিকল্পিতভাবে সাজানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, “ঘটনাটি সরাসরি না দেখলেও স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। তারা এটিকে নারীর প্রতি অবমাননা ও পারিবারিক সহিংসতার একটি জঘন্য উদাহরণ হিসেবে দেখছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি কেবল একটি পারিবারিক ঘটনা নয়, বরং কন্যাসন্তান জন্মকে ঘিরে সমাজে প্রচলিত পশ্চাৎপদ মানসিকতার প্রতিফলন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।