ডেস্ক নিউজ।
দেশের ৩২টি বিমা কোম্পানি বর্তমানে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর মধ্যে ১৫টি জীবন বিমা এবং ১৭টি সাধারণ বিমা প্রতিষ্ঠান। সময়মতো বিমা দাবির অর্থ পরিশোধ না করায় সাধারণ মানুষের আস্থা হারাচ্ছে এ খাত, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে জিডিপিতে বিমার অবদান হ্রাসে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর মতিঝিলে আইডিআরএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম। তিনি বলেন, কোম্পানিগুলোর আর্থিক কাঠামো, সম্পদ, দায় ও দাবি পরিশোধের সক্ষমতা বিশ্লেষণ করে ঝুঁকির মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আইডিআরএর অভ্যন্তরীণ এক সূত্র জানিয়েছে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জীবন বিমা কোম্পানির তালিকায় রয়েছে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ, পদ্মা ইসলামী লাইফ, প্রাইম ইসলামী লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, সানলাইফসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
চেয়ারম্যান আরও জানান, জীবন বিমা খাতে প্রায় ৪৫ শতাংশ ও সাধারণ বিমা খাতে ৪৭ শতাংশ দাবি এখনো বকেয়া। এসব দাবি পরিশোধ না করায় খাতটির ওপর আস্থা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ২০২৪ সালেই বিমা সংক্রান্ত ২৪,৮৫২টি অভিযোগ জমা পড়ে, যার বেশিরভাগই দাবি পরিশোধসংক্রান্ত।
সংস্থাটি জানিয়েছে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নতুন আইন ও বিধিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক খাতের মতো বিমা খাতেও ‘রেজ্যুলেশন ফ্রেমওয়ার্ক’ চালুর সুপারিশ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একীভূতকরণ, অবসায়ন বা অধিগ্রহণের মতো কাঠামোগত সংস্কার সম্ভব হবে।
জিডিপিতে বিমা খাতের অবদানও ধীরে ধীরে কমছে। ২০১০ সালে যেখানে এ খাতের অবদান ছিল ০.৯৪ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা নেমে আসে ০.৪১ শতাংশে। ২০২৪ সালে তা আরও কমেছে বলে জানান চেয়ারম্যান।
এদিকে, জনবল সংকটের কারণেও খাতটির কার্যক্রম তদারকিতে সমস্যা হচ্ছে। অনুমোদিত ১৬০টি পদের বিপরীতে আইডিআরএতে কর্মরত আছেন মাত্র ১০৭ জন।
সংস্থাটির ব্যয় বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে বিমা কোম্পানিগুলোর নিবন্ধন নবায়ন ফি প্রতি হাজার টাকায় ১ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবও করা হয়েছে।