ডেস্ক নিউজ।
ঢাকা, ১৫ জুলাই: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সম্প্রতি একটি প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এই বেতন গ্রেড কার্যকর হলে সরকারের বছরে অতিরিক্ত ৩৪১ কোটি ৪৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪০ টাকা খরচ হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশনস) মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানিয়েছেন, গত রোববার এই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে শুধুমাত্র রিটকারী ৪৫ জন শিক্ষক নন, দেশের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড উন্নীত করা সম্ভব হবে। তবে এটি কবে নাগাদ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে, সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট দিনক্ষণ বলতে পারেননি, কিন্তু আন্তরিকভাবে কাজ করার কথা জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকের পদ থাকলেও, কর্মরত আছেন ৩২ হাজার ৩৫২ জন। দীর্ঘদিনের আইনি লড়াইয়ের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত ১৯ জুন উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের বেতন বিদ্যমান গ্রেড ১১ থেকে ১০-এ উন্নীত করে অর্থ মন্ত্রণালয় অফিস আদেশ জারি করে। এর আগে গত ১৩ জুন, আপিল বিভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করতে এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অফিশিয়াল গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে দেওয়া হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখেন। হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেদিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরবর্তীতে প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে। এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন শিক্ষক হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। ডিপিই থেকে পাঠানো প্রস্তাবটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে, সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। অনুমোদন মিললে এ বিষয়ে অফিস আদেশ জারি করা হবে।