ফাতেমা আকতার তোয়া
নরসিংদীর বিলাসদীতে অবস্থিত নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস, যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সুশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে, সেটি আবারও প্রমাণ করেছে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব। ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ জিপিএ ৫ অর্জনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা বোর্ডে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। এই অভূতপূর্ব সাফল্য শুধু নরসিংদী নয়, পুরো বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
‘সুশিক্ষাই পারে একটি জাতিকে উন্নতির স্বর্ণশিখরে পৌঁছে দিতে’—এই দর্শনকে ধারণ করে ২০০৮ সালে বিশিষ্ট শিল্পপতি ও থারমেক্স গ্রুপের মালিক আলহাজ্ব আব্দুল কাদির মোল্লা ও তার স্ত্রী নাসিমা মোল্লা নরসিংদী শহরের প্রাণকেন্দ্রে এই ব্যতিক্রমী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। আব্দুল কাদির মোল্লা শুধু একজন সফল শিল্পপতিই নন, শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান তাকে ‘শিক্ষাবন্ধু’ হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছে। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নরসিংদীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো নির্মাণ, যানবাহনের ব্যবস্থা, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানসহ নানা ধরনের সহায়তা করা হয়েছে। তার এই শিক্ষানুরাগই নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমসের ভিত্তিস্থাপন করে।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে ধারাবাহিক শতভাগ পাসসহ প্রায় প্রতি বছরই বোর্ডের সেরা ফল অর্জন করে আসছে। এটি তার প্রতিষ্ঠাতাদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।
নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমসের এই ধারাবাহিক সাফল্যের পেছনে রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট শিক্ষাদান পদ্ধতি ও কঠোর শৃঙ্খলা। বর্তমানে প্রায় ৫,৫০০ শিক্ষার্থী এবং ১৬৪ জন তরুণ ও মেধাবী শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান।
তাদের সাফল্যের মূল কারণগুলো হলো:
সম্প্রতি ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমস থেকে অংশ নেওয়া ৩২০ জন শিক্ষার্থীর সবাই জিপিএ ৫ অর্জন করেছেন। যখন দেশের অনেক জায়গায় পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হতাশা ছিল, তখন তাদের এই শতভাগ জিপিএ ৫ অর্জন নিঃসন্দেহে একটি ‘ম্যাজিক’ বা বিস্ময় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, সঠিক পরিকল্পনা, কঠোর পরিশ্রম এবং নিবিড় তত্ত্বাবধান থাকলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সেরা ফল অর্জন সম্ভব।
নাসিমা কাদির মোল্লা হাই স্কুল অ্যান্ড হোমসের প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় একটি মানসম্মত বিদ্যালয় হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা। আলহাজ্ব আব্দুল কাদির মোল্লা সব সময় চেয়েছেন, সুশিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ‘মানবসম্পদে পরিণত হোক’ এবং সমাজে ‘সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত বেকার’ তৈরি না হোক।
এই প্রতিষ্ঠানটি নরসিংদীর মতো মফস্বল শহরে বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করে একটি মডেল স্থাপন করেছে, যা অন্যান্য এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও অনুপ্রাণিত করতে পারে। তাদের এই সাফল্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।