ডেস্ক নিউজ।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে আরেকটি সরকার কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তার মতে, এটি এখন আর গোপন কিছু নয়, বরং সবার কাছেই স্পষ্ট। সরকার সম্পর্কে জনমানসে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতার প্রশ্নকে সামনে এনেছে।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: এক বছরের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
দেবপ্রিয় বলেন, “আমরা সরকার বলতে যাদের দেখি আনুষ্ঠানিকভাবে, তার ভেতরেও আরেকটা সরকার রয়েছে। এখন সরকারের নিরপেক্ষতা প্রমাণ করা কাদম্বরীকেই করিতে হইবে।” তিনি মনে করেন, দলীয় নিরপেক্ষতার অভাব এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি সরকারের অবস্থান স্পষ্ট নয়।
অর্থনীতিবিদ বলেন, “বৈষম্যবিরোধী চেতনায় সরকার এলেও তা অর্থনৈতিক সংস্কার ও দুর্বল জনগণের পক্ষে কার্যকরভাবে প্রতিফলিত হয়নি। এমনকি উৎপাদনশীল উদ্যোক্তারাও সেই চেতনার সুবিধা পাননি।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সুষ্ঠু ও প্রকৃত নির্বাচন আয়োজনে কেবল প্রশাসনিক বাহিনী যথেষ্ট নয়। সেনাবাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। অস্ত্র উদ্ধারে ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তাদের মাঠে থাকতে হবে।” তিনি যোগ করেন, “সরকারের সময় এসেছে একটি ‘ডেস্ক ক্লিয়ারিং লিস্ট’ করার। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা যদি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন, তবে তিনি কী দিয়ে সমাপ্তি টানতে চান তা স্পষ্ট করা দরকার।”
দেবপ্রিয় আরও বলেন, “দেশ থাকবে, জনগণ থাকবে, সরকার আসবে–যাবে। এখন সময় হলো আগামী এক বছরের ‘নিষ্ক্রমণ কৌশল’ কী হবে তা ঠিক করা। নির্বাচনের ইশতেহারে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”
গোলটেবিল বৈঠকে শুরুতেই রাজধানীর উত্তরায় একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হোসেন জিল্লুর রহমান, আনু মুহাম্মদ, ফরহাদ মজহার, সারা হোসেন, আলতাফ পারভেজ, কামার আহমাদ সাইমন, জাহেদ উর রহমান, মাহা মীর্জা এবং সহুল আহমদ প্রমুখ।