বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক।
গাজায় যুদ্ধের প্রভাব ইসরায়েলি সেনাদের মানসিক স্বাস্থ্যে ভয়াবহভাবে পড়ছে—যা আত্মহত্যার ক্রমবর্ধমান ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (পিটিএসডি) এবং বেসামরিক জনগণের ওপর সহিংসতায় জড়িত থাকার ফলে ‘নৈতিক আঘাত’ এই সংকটকে তীব্র করছে।
২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন সেনা আত্মহত্যা করেছেন, যা ২০২১ সালের ১১ এবং ২০২২ সালের ১৪ জনের তুলনায় অনেক বেশি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, কেবল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই ২৮ জন সেনা আত্মহত্যা করেন।
সাম্প্রতিক উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছেন ২৭ জুলাই রিজার্ভ সেনা অ্যারিয়েল মিয়ার তামান এবং ৫ জুলাই পিটিএসডি আক্রান্ত ড্যানিয়েল এদ্রি। জুলাই মাসে আরও দুই সেনার ‘সন্দেহজনক আত্মহত্যা’ এবং ১৫ জুলাই কর্পোরাল ড্যান ফিলিপসনের মৃত্যু এই তালিকায় যুক্ত হয়।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম কেএএন জানিয়েছে, প্রায় এক লাখ রিজার্ভ সেনা ছুটির পর আর দায়িত্বে ফেরেনি, যদিও সরকারি হিসাব অনুযায়ী ফেরার হার ৮০ শতাংশ। এ ছাড়া বিমান বাহিনীর এক হাজার সদস্য যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানানো এবং শতাধিক কর্মকর্তার খোলা চিঠিতে যুদ্ধকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দেওয়ার ঘটনা সেনাদের মনোবল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, নৈতিক আঘাত এবং পিটিএসডি নতুন প্রজন্মের সৈন্যদের মধ্যেও বৃহত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সংকট তৈরি করতে পারে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ১৬ হাজার সেনা মানসিক সেবা নিয়েছেন এবং ৩,৭৭০ জন আনুষ্ঠানিকভাবে পিটিএসডি রোগী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৭ হাজারেরও বেশি শিশু। অনেকেই গুরুতর আহত বা অঙ্গহানি নিয়ে বেঁচে আছেন। গবেষকদের মতে, এই সহিংসতা প্রত্যক্ষ করা বা তাতে অংশগ্রহণ করা সেনাদের মানসিক ভাঙনের অন্যতম কারণ।