1. bdtelegraph24@gmail.com : বিডিটেলিগ্রাফ ডেস্ক :
  2. suma59630@gmail.com : ফাতেমা আকতার তোয়া : ফাতেমা আকতার তোয়া
  3. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  4. tarim7866@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
  5. wasifur716@gmail.com : Wasifur Rahaman : Wasifur Rahaman
নিরাপত্তাহীনতায় পুড়ছে শ্রমিকের জীবন: তামিশনা গ্রুপে ছয় মাসে পাঁচ দুর্ঘটনা - বিডিটেলিগ্রাফ | Bangla News Portal, Latest Bangla News, Breaking, Stories and Videos
মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ছাত্র জনতার বিজয়ের এক বছর পূর্তিতে শ্যামনগরে বিএনপির বিজয় মিছিল পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে কলমাকান্দায় চা দোকানি খুন বিশ্বাস, বিনয় ও নিষ্ঠাবান ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা জুয়েল শর্মা অন্তর  গোপালগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত, শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা শেখ হাসিনার প্রতীকী ফাঁসি: এক বছরে বিচার শেষের আহ্বান জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হলেন আনিসুল, স্বপদে বহিষ্কৃতরাও নিরাপত্তাহীনতায় পুড়ছে শ্রমিকের জীবন: তামিশনা গ্রুপে ছয় মাসে পাঁচ দুর্ঘটনা ফেনীর সোনাগাজীতে পরিত্যক্ত ঘর থেকে অস্ত্র ও মোটরসাইকেল উদ্ধার দৌলতপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক হয়নি: এনসিপির নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী

নিরাপত্তাহীনতায় পুড়ছে শ্রমিকের জীবন: তামিশনা গ্রুপে ছয় মাসে পাঁচ দুর্ঘটনা

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ২১ জন খবরটি পড়েছেন

টঙ্গীতে তামিশনা গ্রুপের কারখানায় আবারও শ্রমিক দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীর ভাদাম এলাকায় অবস্থিত ইটাফিল ডাইং অ্যান্ড অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেডে ওয়াশ ডাইং বয়লার মেশিনে কাজ করার সময় গরম সোয়েটার ও পানি ছিটকে পড়ে দুই শ্রমিক আহত হন।

দগ্ধদের একজন মো. হাসান (৪০) প্রায় ১২ শতাংশ দগ্ধ হয়ে বর্তমানে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপর শ্রমিক মো. খোকনের অবস্থা তুলনামূলক ভালো বলে জানিয়েছেন কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো. সজল। জানা যায়, ঘটনার সময় তারা কারখানার সোয়েটার সেকশনে কাজ করছিলেন। হঠাৎ মেশিনের চাপে গরম পানি ও সোয়েটার ছিটকে পড়ে তারা দগ্ধ হন।

এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত ছয় মাসে তামিশনা গ্রুপের কারখানাগুলোতে কমপক্ষে পাঁচটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় তিন শ্রমিক নিহত এবং অন্তত সাতজন গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই ডাইং ইউনিটে কাজ করার সময় কুড়িগ্রামের চিলমারীর বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সী আব্দুল কুদ্দুস ফুটন্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত পানিতে দগ্ধ হয়ে মারা যান। তিনি টঙ্গীর আলী আকবরের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।নিহত কুদ্দুসের পরিবার অভিযোগ করেছে, দুর্ঘটনার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ মরদেহ গোপনে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করে এবং সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশে বাধা দেয়। শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং: ২০৮১) করার পর টঙ্গী পশ্চিম থানাকে জানানো হলেও ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। বরং পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা নেয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তামিশনা গ্রুপে প্রায় প্রতি মাসেই একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। ৪ ফেব্রুয়ারি বয়লার বিস্ফোরণে তিনজন দগ্ধ হলেও তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। ১২ মার্চ কেমিক্যাল ছিটকে পড়ায় একজন নিহত ও একজন আহত হন, কিন্তু মামলা হয়নি। ২০ মে হিটিং ট্যাংক ফুটো হয়ে দুই শ্রমিক দগ্ধ হলেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। ১৮ জুন গরম পানি ছিটকে পড়ে একজন দগ্ধ হন, কিন্তু সংবাদ প্রকাশে বাধা দেওয়া হয়। ২৯ জুলাই কেমিক্যালে দগ্ধ হয়ে একজন নিহত এবং আরেকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। আর সর্বশেষ ৩ আগস্টের ঘটনায় দুই শ্রমিক দগ্ধ হন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, কারখানায় নিয়মিত মেশিন রক্ষণাবেক্ষণ হয় না, কেমিক্যাল ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রশিক্ষণ নেই এবং অধিকাংশ শ্রমিকের কাছে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, “আমরা ভয়ে মুখ খুলি না। যদি বলি, তাহলে চাকরি যাবে। বারবার দুর্ঘটনা হচ্ছে, তবুও কর্তৃপক্ষ চোখ বন্ধ করে আছে।”২৯ জুলাইয়ের ঘটনার পর শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধলেও তা বড় ধরনের আন্দোলনে রূপ নেয়নি। শ্রমিকরা চারটি প্রধান দাবি তুলেছেন—শ্রমিক নিরাপত্তা গ্যারান্টি ও বীমা কাঠামো চালু, নিহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ, দায়ী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং প্রতিটি দুর্ঘটনার তদন্তে স্বচ্ছতা ও গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। যদিও কোম্পানি দাবি করছে তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে, তবে শ্রমিকদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

শ্রমিক নিরাপত্তার এই ভয়াবহ সংকট কেবল ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং এটি শিল্প খাতে নিরাপত্তাহীনতার একটি বড় উদাহরণ। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গাজীপুর জেলা প্রশাসনের প্রতি শ্রমিকরা আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিটি শ্রমিকের জীবন ও নিরাপত্তাকে রাষ্ট্রের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য।এই ধারাবাহিক দুর্ঘটনা যেন এক সতর্কবার্তা, আজ কুদ্দুস, কাল হাসান, আর পরশু কে?

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2025
Theme Customized By BreakingNews