সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৯ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখে জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের ব্যবধান আরও বড়—৪১ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতল টাইগাররা। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭ দশমিক ৩ ওভারে ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। জবাবে ৪১ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে স্বাগতিক দল।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দেখেশুনে শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তানজিদ ও ইমন। এর মধ্যে তানজিদ ছিলেন ধীরস্থির, অন্যপ্রান্তে ইমন খেলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে। কিন্তু পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ভাঙে তাদের জুটি। ক্লেইনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে বটম এজ হয়ে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দেন ইমন, ২১ বলে করেন ২৩ রান, যার মধ্যে ছিল তিনটি চার ও একটি ছক্কা। ইমন ফেরার পর লিটনের সঙ্গে জুটি গড়েন তামিম। ১২তম ওভারে রেকর্ডও গড়েন এই ওপেনার। ২০২৫ সালে এ সংস্করণে তানজিদের ছক্কা এখন ২৩টি। পারভেজ মেরেছেন ২২টি। রেকর্ড ভাঙা ছক্কাটি তানজিদ মেরেছেন ম্যাক্স ও’ডাউডকে মিড উইকেট দিয়ে। এরপর হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে নেন। আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি এটি তার। তার দুর্দান্ত ইনিংসে সহজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সফরকারীদের। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেয়েই দুর্দান্ত শুরু করেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। শুরুতেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন। নাসুমের স্পিন ঘূর্ণিঝড়ে ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড ১০ বলে ৮ রান এবং তেজা নিদামানুরা গোল্ডেন ডাক মেরে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।নাসুমের জোড়া উইকেট শিকারের পর অধিনায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে ২১ রান তুলে ফেলেছিলেন বিক্রমজিৎ সিং। নাসুমের করা পঞ্চম ওভারে ব্যাট হাতে দারুণ দৃঢ়তা দেখান ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ব্যাটার, দুটি চারও হাঁকান। সেই ওভারে মোট ১২ আসে। তবে এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে তৃতীয় উইকেট এনে দেন তাসকিন আহমেদ।
গতিতে বিভ্রান্ত করে ডাচ ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংকে শিকার বানান তাসকিন। বল আকাশে তুলে দেন বিক্রমজিৎ, ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজ ক্যাচটি লুফে নেন তানজিম। এরপর ইনিংসের নবম ওভারে বোলিংয়ে এসেই সাফল্য এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে ফিরিয়ে দেন সাজঘরে। ১১ বল মোকাবেলায় ৯ রান করেন এডওয়ার্ডস।
দুই দফা সহজ রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া করলেও তৃতীয় প্রচেষ্টায় সফল হয় বাংলাদেশ। শর্ট মিডউইকেট থেকে সাইফ হাসানের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে ফেরেন ডাচ ব্যাটসম্যান নোয়াহ ক্রস। টেলিভিশন রিপ্লে দেখে তাকে আউট ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার সাথিরা জাকির। এতে ৬১ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস।এর ঠিক পরের বলেই ডাচদের আরও একটি ধাক্কা দেন তানজিম হাসান। তার বলে উইকেটকিপার লিটনের গ্লাভসে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন শারিজ আহমেদ। বাংলাদেশকে সপ্তম উইকেট এনে দেন দ্য ফিজ সিকান্দার জুলফিকারকে বোল্ড করেন বাঁ-হাতি এই পেসার। এরপর স্বাগতিকদের অষ্টম উইকেট এনে দেন তাসকিন। কাইল ক্লাইনকে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে জাকেরের ক্যাচ বানিয়ে নিজের দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন অভিজ্ঞ এই পেসার।
কিছুক্ষণ পরই পল ফন মিকেরেনকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন নাসুম। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। ক্লেইন ও মিকেরেন দ্রুত ফিরলে ১০০ রান ছোঁয়াও কঠিন হয়ে পড়ে ডাচদের। তবে আরিয়ান দত্তের ৩০ রানের সুবাদে তিন অঙ্ক ছুঁতে সক্ষম হয় দলটি। শেখ মেহেদীর বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন আরিয়ান। এতে ১০৩ রানে অলআউট হয় সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে নাসুম ৩টি, তাসকিন ও মুস্তাফিজ ২টি করে উইকেট নেন।