যশোর প্রতিনিধি।
যশোরের ঐতিহ্যবাহী মণিহার সিনেমা হল টিকে থাকার লড়াইয়ে হিমশিম খাচ্ছে। একসময় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম হিসেবে পরিচিত এই হলটি ছিল সিনেমাপ্রেমীদের প্রধান আকর্ষণ। কিন্তু এখন বছরের বেশিরভাগ সময় দর্শকশূন্য থাকে, শুধু ঈদ মৌসুমেই কিছুটা ভিড় দেখা যায়।
হলটির কর্ণধার জিয়াউল ইসলাম মিঠু জানান, দেশি ছবির সংকট এবং বিদেশি ছবি আমদানির পথ বন্ধ থাকায় মণিহারকে সচল রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরনো টলিউড ছবি দিয়েই কোনোভাবে চলমান রাখা হচ্ছে, তবে দর্শকপ্রবাহ নেই বললেই চলে। কোরবানি ঈদের পর থেকে নতুন ঢালিউড ছবি মুক্তি পায়নি, আর যেগুলো এসেছে সেগুলো ‘আর্ট ফিল্ম’, যা সাধারণ দর্শককে টানতে ব্যর্থ হয়েছে।
হলের ব্যয়ভার টানতে সিনেমার আয়ের পাশাপাশি কমপ্লেক্সের দোকান, হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারের আয়ে নির্ভর করতে হচ্ছে মালিককে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ঐতিহ্যবাহী এই হল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
জিয়াউল ইসলাম আরও বলেন, “আগে প্রতি সপ্তাহে দুটি ছবি আসত, এখন মাসে একটিও পাওয়া যায় না। আমদানি নিষিদ্ধ হওয়ায় বলিউড সিনেমাও চালানো যাচ্ছে না। স্থানীয় প্রযোজনা বাড়ানো না হলে বা আমদানির সুযোগ না দিলে সিনেমা হল টিকে থাকতে পারবে না।”
সম্প্রতি হল মালিকরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ছবি আমদানির বিষয়ে আলোচনা করলেও এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে মণিহারের মতো ঐতিহাসিক একটি সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।
১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে মণিহার। ১,৪০০ আসন বিশিষ্ট এই হলটি এসএম সুলতানের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ-পরবর্তী সাজসজ্জার মাধ্যমে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিল।