মনিরামপুর প্রতিনিধি।
যশোরের মনিরামপুরে প্রায় ৭০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ‘জামাই বাজার’-এ এবারের আয়োজনও ছিল জমজমাট। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলা এ বাজারে কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় বণিক সমিতি।
ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের প্রতাপকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীর দিনে বসা এ বাজারে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। জামাইদের জন্য বিশেষ এ মেলায় মূল আকর্ষণ ছিল কাতলা, রুই, ব্ল্যাক কার্প, গ্লাস কার্প, পাঙাশ ও সিলভার কার্পের মতো বড় আকারের মাছ। এ বাজারে বিক্রি হওয়া মাছের ওজন ছিল ৫ থেকে ১৩ কেজি পর্যন্ত।
স্থানীয়দের ভাষ্যে, শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার সময় জামাইরা প্রতিযোগিতা করে বড় মাছ কিনে নিয়ে যান। সঙ্গে থাকে মুড়ি, মুড়কি, জিলাপি ও অন্যান্য খাবার। একে ঘিরে আনন্দ-উৎসব ছড়িয়ে পড়ে পরিবার ও আশপাশের গ্রামগুলোতে।
শুধু মনিরামপুর নয়, অভয়নগর ও সদর উপজেলা থেকেও মানুষ এসে মাছ কেনেন। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে মেলাটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতীক হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
৪০ বছরের অভিজ্ঞ মাছ ব্যবসায়ী শংকর বিশ্বাস জানান, নিজের ঘের থেকে তিনি ৬৫টি মাছ এনেছেন, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল সাড়ে ১২ কেজি ওজনের কাতলা। অন্যদিকে প্রদীপ কুমার বাইন বলেন, প্রতি বছর জামাই হিসেবে তিনি শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে এখান থেকে বড় মাছ কিনে নিয়ে যান।
যদিও এ বছর বিক্রেতাদের একটি অংশ দ্বন্দ্বের কারণে মূল বাজারে দোকান বসান, ফলে মেলায় মাছ কিছুটা কম দেখা গেছে। তবুও মেলাকে ঘিরে আশপাশে হরেক রকম খাবার ও মিষ্টির দোকান বসে।
ঢাকুরিয়া প্রতাপকাটি বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান গাজী জানান, ১৯৫০ সাল থেকে চলে আসা এ মেলা এ অঞ্চলের ঐতিহ্যের অংশ। এই সংস্কৃতি ধরে রাখতে তারা নানা উদ্যোগ নিচ্ছেন।