রফিকুল ইসলাম দেবহাটা প্রতিনিধি। ইছামতি নদীতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবছর সাতক্ষীরার দেবহাটা ২১ টা প্রতিষ্ঠানে প্রতিমা ধর্মীয় ভক্তি ও উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটে। সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন বয়সের মানুষ উপজেলার পূজাম-পগুলোতে ভক্তি-শ্রদ্ধার সঙ্গে দেবী দুর্গার পূজা-অর্চনায় অংশ নেন। দশমীর দিন সকালে দেবী বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়। ঢাক-ঢোল, শঙ্খধ্বনি আর আরতির সুরে মুখরিত হয়ে ওঠে পূজাম-প ও আশপাশের এলাকা। প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে উপজেলার গাজিরহাট কুলিয়া পারুলিয়া সখিপুর দেবহাটাও প্রধান সড়কগুলোতে ছিল ভক্ত-অনুরাগী ও দর্শনার্থীদের ঢল। পরিবার-পরিজন নিয়ে বহু মানুষ প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা উপভোগ করেন। প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। প্রতিটি মন্ডপে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।
উৎসব শেষে পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও ভক্তবৃন্দ প্রশাসনের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। তারা বলেন, ভক্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে প্রতিবছর এ উৎসব আয়োজন করা হয়। দুর্গোৎসব নির্বিঘে সম্পন্ন করতে প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিসহ সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের ভূমিকায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ বছর দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে মর্ত্যে আগমন করেন এবং দোলায় (পালকি) চড়ে বিদায় নেন। শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী এই আগমন ও বিদায় ভক্তদের মনে এনেছে ভিন্ন ভিন্ন প্রতীকী বার্তা। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, গজে আগমন শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণের প্রতীক। ভক্তরা মনে করেন, দেবী মা এ বছর জগতে আনবেন শস্যের প্রাচুর্য, বৃষ্টি ও জনকল্যাণ। ফলে পূজার শুরু থেকেই ভক্তদের মাঝে ছিল আনন্দ-আশার আবহ। তবে দোলায় বিদায় শাস্ত্রমতে শুভ নয়। একে “মড়ক বাহন” হিসেবে ধরা হয়। লোকবিশ্বাসে, এ ধরনের বিদায় রোগ-বালাই, সামাজিক অশান্তি কিংবা দুর্ভোগের ইঙ্গিত বহন করে। তাই প্রতিমা বিসর্জনের দিন ভক্তদের মনে কিছুটা শঙ্কা কাজ করেছে।