নিজস্ব প্রতিনিধি।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খোলপেটুয়া নদী, যেটিকে অনেকেই ‘দ্বিতীয় টাকি’ নামে অভিহিত করেন, সেই নদীতেই এবারও অনুষ্ঠিত হলো বিজয়া দশমীর বিসর্জন উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবছরও হাজারো মানুষের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে নদীর দুই পাড়।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিজয়া দশমী উপলক্ষে শ্যামনগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিমা নিয়ে খোলপেটুয়া নদীতে বিসর্জনের জন্য আসে বহু পূজামণ্ডপ। প্রতিমা বিসর্জনের মুহূর্তগুলোতে নদীর জলে প্রতিফলিত আলোর ঝলক, ঢাক-ঢোলের বাজনা, উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত ছিলো গোটা এলাকা। ভক্তদের আবেগঘন চোখে ধরা পড়ে ছিল এক অপূর্ব সৌন্দর্য। নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানো হয়। এ সময় হাজারো নারী-পুরুষ “বলো দুর্গা মায়ের জয়” স্লোগানে মুখরিত করে তোলে নদী এলাকা। হিন্দু পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা ফ্রন্ট ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে উৎসবটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।
স্থানীয়রা জানান, গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, পদ্মপুকুর চারটি ইউনিয়ন সম্মিলিতভাবে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গাবার্টি নামক স্থানে ২য় টাকিতে প্রতিমা বিসর্জ্জন অনুষ্ঠিত হয়। খোলপেটুয়া নদী শুধুই একটি নদী নয়, এটি এখন পূজার সময় একটি মিলনমেলার রূপ নেয়। প্রতিবছর এখানে হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়, একসাথে উৎসব পালন করে, আর বিদায় জানায় মা দুর্গাকে। অনেকের মতে, এ উৎসব ও ভিড় টাকির বিসর্জনকেও মনে করিয়ে দেয়। তাই এই খোলপেটুয়া নদীকে অনেকেই ‘দ্বিতীয় টাকি’ নামেও ডাকেন। শেষে কাঁদো-কাঁদো চোখে ভক্তরা একে একে বিদায় জানান দেবী দুর্গাকে, আর প্রার্থনা করেন “আসছে বছর আবার হবে”।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন, শ্যামনগর থানা অফিসার ইনচার্জ হুমায়ূন কবির মোল্লাসহ সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশ, আনসার, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্য বৃন্দ। প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল সুসংগঠিত ও মনোমুগ্ধকর।