1. bdtelegraph24@gmail.com : Bdtelegraph Bangla :
  2. mirzagonj@bdtelegraph24.com : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি : মির্জাগঞ্জ প্রতিনিধি
  3. islam.azizul93@gmail.com : তারিম আহমেদ : তারিম আহমেদ
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বিপাকে অভয়নগরের স্বল্প আয়ের মানুষ - টেলিগ্রাফ বাংলাদেশ
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন্ড অফিসার নিয়োগ, আবেদন চলবে ২১ মার্চ পর্যন্ত লবণ রপ্তানি ও বায়ুশক্তি: কক্সবাজারের নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খাদ্য সংকট, তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের ‘শাপলা কাপ অ্যাওয়ার্ড’ পেলো গৌরীপুরে ২৪ জন গৌরীপুর ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত  শ্যামনগর পৌরসভায় প্রায় ২ বছর পর জম্ম নিবন্ধন জটিলতার অবসান শরণখোলায় বিএনপি নেতার পক্ষে মহিলা দল ও  এতিম শিশুদের মধ্যে ঈদ বস্ত্র বিতরণ  অভয়নগরে ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে ইফতার  বিতরণ  শ্যামনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সেনাবাহিনীর হাতে আটক-৩ সুন্দরবনের গাছের ডাল থেকে এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করলো দুই জেলে

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বিপাকে অভয়নগরের স্বল্প আয়ের মানুষ

  • সর্বশেষ আপডেট : মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ২৪৬ জন খবরটি পড়েছেন

তারিম আহমদ ইমন,স্টাফ রিপোর্টার

অভয়নগরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চরম বিপাকে আছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সীমিত আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম হয়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারদরের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে দিশেহারা তাঁরা। আয় বাড়ছে না, বাড়ছে ব্যয়। এমন অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে অভয়নগরের নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে চরম আকারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। স্বল্প আয়ের মানুষের সাথে কথা হলে তাঁরা জানান, দৈনিক যে টাকা আয় করেন তা দিয়ে নিত্যপণ্য কী রেখে কী কিনবেন। করোনার চাপ সামাল দিতে গিয়ে এমনিতেই চরম সংকটে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন। বর্তমানে করোনার চেয়ে ভয়াবহ হয়ে দঁাড়িয়েছে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। আবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিপাকে ফেলছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।

কথা হয় উপজেলার তালতলা রেল বস্তির মিল শ্রমিক হাফিজা বেগমের সাথে তিনি বলেন, মিলে কাজ করে ২২০ টাকা হাজিরা পাই সব জিনিসের দাম এত বেশি সংসার চালাতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ছেলে মেয়ে নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। আমার শরীরটাও ভালো না। পেটে কিছু দিবো না ঔষধ কিনবো, নাকি ছেলে মেয়ের পড়ালেখা করাবো ?

একই এলাকার মিল শ্রমিক রোজিনা আক্তার জানান, ‘জিনিসের দাম বাড়াতে সংসার চালাতে গিয়ে দেনা হয়ে যাচ্ছি। ৬০ টাকা কেজি চাল কিনে বাজার করতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। তাই আমার দুই বেলা ডিউটি করতে হয়।’

উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের নিমার্ণ শ্রমিক আব্দুস সালাম (৩৬) জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে আছেন খেটে খাওয়া নিমার্ণ শ্রমিকেরা। তারা প্রতিদিন যে ৩০০-৪০০ টাকা মজুরি পায় তা দিয়ে কোনটা রেখে কোনটা কিনবে? তাও সপ্তাহে প্রতিদিন কাজ পাওয়া যায় না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যে চাল কিনতাম ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় তা বর্তমানে ৫০ থেকে ৫২ টাকা এবং ১৩০ টাকার তেল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আবার চাল, তেলের দামের সাথে সবজির দামও ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে নিমার্ণ শ্রমিকদের দিন কাটাতে হচ্ছে খুব কষ্টে। এছাড়া নওয়াপাড়া টু পায়রা রুটে ব্যাটারি চালিত ইজি বাইকে অযাচিত ভাড়া আদায় করছে।

উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দেয়াপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আসাদুল গাজী বলেন, বর্তমানে দুইবেলা ভ্যান চালিয়েও ৪০০ টাকা আয় করতে পারি না। চাল, তেল সহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেশি। সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয়।

এ ব্যাপারে অভয়নগরের সুধীজনরা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে আছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। তাই সমাজের বিত্তবানদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো। পাশাপাশি নিত্যপণ্যের বাজার প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা।

নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম মল্লিক জানান, ক্রমাগত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে স্বল্পআয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন-চাল, ডাল, তেল, ডিম, মাছসহ সব ধরনের মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষদের অনেক বিশেষ ধরনের খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বর্তমানে মুরগীর দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পূর্বে সপ্তাহে একদিন মাংস খেতে পারলেও এখন মাসে একদিন মাংস খাওয়া কষ্ট হয়ে যাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের। সব ধরণের মাংস ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে তাদের। তিনি আরও জানান, কিছু অসাধু ও সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী বাজারে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেশ কিছু জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বাজার মনিটরিং করতে হবে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের স্বল্প আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর অভয়নগর উপজেলা শাখার সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষেরা অনেক কষ্টে আছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু নিম্ন আয়ের মানুষের আয় বাড়ছে না। তাদের পাশাপাশি কিছুটা স্বচ্ছল পরিবারও বর্তমানে কষ্টে দিন পার করছে। জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে আরও বেশি অস্থিরতা বিরাজ করছে। আন্র্Íজাতিক বাজারে দাম বাড়বে শুনলেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। অথচ যখন দাম কমে তখন আর কমে না। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার সময় অশ্বের গতিতে বাড়ে কিন্তু কমার সময় কচ্ছপের গতি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারকে টিসিবি’র মাধ্যমে পণ্য বিতরণ আরও বাড়াতে হবে। এবং বিত্তবানদের উচিত সম্পদের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করতে হবে এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানো।

অভয়নগর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুনীল দাস বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিছু পণ্যের দাম অসহনীয়ভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়াও এ অ লে বর্তমানে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, নসিমন, করিমনসহ কিছু যানবাহনে অযাচিতভাবে বেশি ভাড়া আদায় করছে। এতে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন যাত্রার মান আরও দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, এমন ক্রান্তিলগ্নে জনপ্রতিনিধিদের উচিত বিত্তবানদের সাথে নিয়ে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা। এবং বাজার মনিটরিং জোরদার করা।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2024
Theme Customized By BreakingNews