মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।
ঈদকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। টানা তাপদাহ উপেক্ষা করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভীড় দেখা যায় দোকানগুলোতে। কাপড় ও কসমেটিকস এর দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় ছিল লক্ষণীয়।
উপজেলার সুবিদখালী বন্দরে একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমল ‘নান্নু শপিং কমপ্লেক্সে’ দোকানগুলোতে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ক্রেতাদের উপস্থিতি। দরদাম শেষে ক্রেতার হাতে পছন্দের পোশাকটি তুলে দিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। ক্রেতাদের মধ্যে যুবক-যুবতী,নারী ও শিশুদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্যনীয়। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই কেনাকাটা জমে উঠছে।
গতকাল রবিবার উপজেলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমল ‘নান্নু শপিং কমপ্লেক্স’ ও বিভিন্ন দোকান
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা বাড়ার সাথে সাথে চলমান তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের
আনাগোনা বাড়তে থাকে। দোকানের সামনে বিভিন্ন ডিজাইনের আকর্ষনীয় পোশাক ডলে সাজিয়ে
হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে সাজিয়ে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। মেয়েদের পোশাকের পাশাপাশি ছেলেদের পোশাকের
দোকানগুলোতে উঠতি বয়সী তরুন ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ছেলেদের পোশাকের দোকানগুলোতে জিন্স প্যান্ট,ষ্টিচ শার্ট, কালারফুল পাঞ্জাবি ও সাদা পাজামার চাহিদা বেশী বলে বিক্রেতারা জানান।
‘নান্নু শপিং কমপ্লেক্স’ এর বিসমিল্লাহ গার্মেন্টস এর মালিক মোঃ গফুর হাওলাদার বলেন, ১৫ রমজান পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতি ছিল খুব কম,১৫ রমজানের পর ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে,আগত ক্রেতাদের মধ্যে মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ‘নায়রা’ নামের পোশাক। ‘নায়রা’নামের মেয়েদের এই পোশাকটি সবচেয়ে বেশী বিক্রি হচ্ছে। মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে থাকা ‘নায়রা’ নামের পোশাকটি সাইজ অনুযায়ী ২২০০ টাকা থেকে ৩০০০টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। অন্যদিকে ছেলেদের পোশাকের মধ্যে ষ্টিচ শার্ট ও কালারফুল পাঞ্জাবির চাহিদা বেশী। মূল্য বেশী চাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, আকাশ চুম্বী মূল্য চেয়ে ক্রেতা ফিরিয়ে দিয়ে আমাদের কোন লাভ নেই। স্বল্প লাভে বিক্রি করতে পারলেই আমরা খুশি।
সুবিদখালী বাজারের মোল্লা গার্মেন্টস এন্ড বোরকা হাউজ এর মালিক মোঃ নাসির উদ্দীন (হিরন মোল্লা)
বলেন, রোজার শুরুতে ক্রেতারা এসে পোশাক দেখে ঘুরে চলে যেত,২০ রমজানের পর আল্লাহর রহমতে বেচাকেনা
বেড়েছে। ক্রেতাদের মধ্যে যুবতী মেয়েদের থ্রি পিছ,মেয়ে বাচ্চাদের পোশাক ও ছেলে বাচ্চাদের কারারফুল পাঞ্জাবীর
চাহিদা বেশী।
উপজেলার একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শপিংমল ‘নান্নু শপিং কমপ্লেক্স’ এ শিশু সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে
কেনাকাটা করতে আসা শারমিন জাহান মুক্তা বলেন, “এই শপিংমলটি নতুন, তুলনামূলক অন্য দোকান গুলো
থেকে এখানে এক ছাদের নীচে বাচ্চাদের খেলনা থেকে শুরু করে নারী-পুরুষসহ সব বয়সী মানুষের রেডিমেট
পোশাক,জুতা,কসমেটিকসসহ ঘর সাজানো সামগ্রী থেকে শুরু মোটামুটি সব কিছুই পাওয়া যায়।
উপজেলার ছৈলাবুনিয়া এলাকার মোঃ সৈকত মল্লিক বলেন,“বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। জুতা কিনেছি,
পাঞ্জাবী কিনবো কিন্তু পছন্দ না হওয়ায় প্রতিদিন নতুন নতুন যে ড্রেস আসে, সেগুলো দেখে যাচ্ছি। পছন্দ
হলে এক-দুইদিন পর এসে কিনবো।”
অন্যদিকে স্বল্প আয়ের মানুষদের কেনাকাটা করার জন্য উপজেলায় পৃথক কোন মার্কেট না থাকায় সুবিদখালী
বাজারের রাস্তার দু পার্শ্বে ভাসমান চৌকি বসিয়ে চলছে ঈদের বেচাকেনা। কাপড় বিক্রেতা মোঃ আবু তালেব
মিয়া ও শাহাদাত হোসেন বলেন, “আমাদের এখানে যারা জামা কাপড় কিনতে আসেন তারা একেবারেই নিম্ন
আয়ের এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এখানে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০/১৫০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যের জামা
কাপড় পাওয়া যায়। মূলত নিম্ন আয়ের মানুষরাই আমাদের ত্রেতা এখানে বড় লোকেরা আসে না। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত
শ্রেণির মানুষ এবং আমাদের সামাজিক লেভেল এক,তাই তাদের কাছে আমরা বেশি লাভ করি না, তবুও ঈদে ভালো
ব্যবসা হচ্ছে ।