মার্কিন গোপন দলিল ফাঁস করে সাড়া ফেলে দেওয়া ওয়েবসাইট উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর মার্কিন এক আদালতে দোষ স্বীকার করার পর মুক্তি পেয়েছেন। বিচারক বলেছেন মি. অ্যাসাঞ্জ যে ৬২ মাস জেল খেটেছেন সেটাই যথেষ্ট। রায়ের পর অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন মি. অ্যাসাঞ্জ।
মার্কিন বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে মি. অ্যাসাঞ্জ বিনা অনুমতিতে আর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পারবেন না।
আদালতের রায়ের পর মি. অ্যাসাঞ্জের আইনি টিম এ মামলাকে ‘মুক্ত মতের জয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তার আইনজীবী জেনিফার রবিনসন বলেছেন মি.অ্যাসাঞ্জের ঘটনা মুক্ত গণমাধ্যম ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে।
“শেষ পর্যন্ত ১৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্ত মানুষ হিসেবে বাড়ি ফিরতে পারছেন,” সাংবাদিকদের বলছিলেন তার আইনজীবী। “এর মাধ্যমে এমন একটি মামলার সমাপ্তি হলো যা একুশ শতকে প্রথম সংশোধনীর জন্য বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে”।
“এটি একটি বিরাট স্বস্তি,” বলছিলেন তিনি।
যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টার বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে আইনি লড়াই করেছেন মি. অ্যাসাঞ্জ। আজ বুধবার প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত মার্কিন ভূখণ্ড নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের আদালতের রায়ের পর মুক্ত মানুষ হিসেবেই আদালত কক্ষ থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসেন।
এর আগে গত সোমবার তাকে মুক্তি দেয় যুক্তরাজ্য। নিজের অপরাধ স্বীকার করার বিষয়ে মি. অ্যাসাঞ্জ সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি করেছেন, সেটির ধারাবাহিকতাতেই তাকে ছেড়ে দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। সেখান থেকে তিনি সরাসরি নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের আদালতে হাজির হন।
যুক্তরাজ্যের পুলিশ ৫২ বছর বয়সী মি. অ্যাসাঞ্জকে ২০১৯ সালের গ্রেফতার করেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষা বিষয়ক গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত।
প্রসঙ্গত ২০১০ সালে ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হৈচৈ ফেলে দেয় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট উইকিলিকস।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের মামলায় গ্রেফতার এড়াতে এক পর্যায়ে তিনি লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয়ে নেন এবং সেখানেই প্রায় সাত বছর কাটান। বিবিসি