গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা বলেছে, রবিবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জুড়ে ইসরাইলের হামলায় বেশ কয়েকজন শিশু, আলজাজিরার একজন টিভি ক্যামেরাম্যান ও তিন উদ্ধারকর্মীসহ অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন।
কাতার ভিত্তিক নিউজ চ্যানেল আলজাজিরার বরাত দিয়ে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের গাজা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মধ্য গাজা উপত্যকায় নুসিরাত শরণার্থী শিবির লক্ষ্য করে চালানো ‘ইসরায়েলি বোমা হামলায়’ চ্যানেলটির ক্যামেরাম্যান আহমেদ আল-লুহ নিহত হয়েছেন।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল নিশ্চিত করেছেন যে, নুসিরাত ক্যাম্পে ‘সিভিল ডিফেন্স সাইটকে লক্ষ্য করে’ চালানো এ হামলায় লুহ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও এ হামলায় উদ্ধারকারী সংস্থার তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে লুহকে হত্যা করার বিষয়টি নিশ্চিত করে দাবি করেছে যে, তিনি ইসলামিক জিহাদের সদস্য ছিলেন এবং গাজায় হামাসের পক্ষে লড়াই করা হামাস গোষ্ঠী’র ‘আগে প্লাটুন কমান্ডার হিসাবে কাজ করেছেন’।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী আরও দাবি করে, হামাস ও ইসলামিক জিহাদ বেসামরিক প্রতিরক্ষা সাইটটিকে ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী আলজাজিরার সাংবাদিকদের হামাস বা তার সহযোগী ইসলামিক জিহাদের সাথে যোগসূত্রের অভিযোগ করে আসছে। তবে আলজাজিরা দৃঢ়ভাবে এ অভিযোগ নাকচ করে জানিয়েছে, ইসরাইল পরিকল্পিতভাবে গাজায় তার কর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। ইসরাইল আলজাজিরা নেটওয়ার্ক নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আইন পাস করেছে।
গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লুহকে নিয়ে আলজাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহত হলেন। ওই অঞ্চলে নিউজ নেটওয়ার্কটির অফিসে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।
রবিবার বাসাল এএফপিকে বলেন, দক্ষিণ গাজার প্রধান শহরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে ইসরাইলি হামলায় বেশ কয়েকজন শিশুসহ অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে।
খান ইউনিসে ‘একটি ক্ষেপণাস্ত্র বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলায় আঘাত হানে।’ এতে ৩৫ জন আহত হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এএফপির প্রতিবেদনটি খতিয়ে দেখছে।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্রের মতে, গাজা শহরের পূর্বে শুজাইয়ার একটি বাড়িতে আরেকটি হামলায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।
বাসাল এর আগে এএফপিকে জানিয়েছিলেন, রাতভর উদ্ধারকারীরা তিন শিশুসহ ১৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। তিনি কেন্দ্রীয় গাজা শহরের একটি বাড়িতে হামলায় আরও নিহত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন।
রবিবার সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে, তারা উত্তর বেইত হানুন ও বেইট লাহিয়া এলাকায় হামলা চালিয়েছে।